ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শেরপুরে দখল হচ্ছে বনের জমি!

শেরপুরে দখল হচ্ছে বনের জমি!

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে সামাজিক বন সৃজনের অজুহাতে শতশত একর বনের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ও কথিত বনের অংশীদাররা বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই বনের জমি দখল করে অবৈধভাবে চাষাবাদ করে আসছে।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, এককালে যেখানে গভীর অরণ্য ছিল। এখন সেখানে বাড়িঘর গড়ে উঠেছে। গভীর অরণ্য এখন জনবসতি। শত শত একর বনের জমিতে এখন পুরোদমে চাষাবাদ হচ্ছে। নতুন করে সামাজিক বন সৃজনের অর্থ বরাদ্দ না থাকলেও বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিজের অর্থে বন সৃজন করে পাহাড়ি জমি দখল করে নিচ্ছে। অনেকেই আবার গড়ে তুলছেন বিভিন্ন ফলের বাগান। সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, রাংটিয়া ফরেস্ট বিট অফিসের পেছনে ও আশপাশে, গজনী বিট এলাকার নকশী, গান্দিগাঁও, বহেড়াতলা, দরবেশতলা, হালচাটি, মালিটিলা, বাকাকুড়া, নয়াপাড়া, পানবর, তাওয়াকুচা, গুরুচরণদুধনইসহ বিভিন্ন স্থানে বনের জমি বেদখলের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে প্রভাবশালীরা। গড়ে উঠেছে শত শত বাড়িঘর। সামাজিক বনের অংশীদাররা বন সৃজন ও বন পাহারার অজুহাতে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এসব অবৈধ বাড়িঘর গড়ে তুলছে। বাকাকুড়া ও গান্দিগাঁও এলাকার বনের জমি প্রায় পুরোপুরি বেদখল হয়ে গেছে। গত চার পাঁচ বছরের মধ্যে পশ্চিম বাকাকুড়ায় বনের জমিতে নয়াপাড়া নামে নতুন একটি গ্রামের আবির্ভাব হয়েছে। এখানে সামাজিক বনায়ন সৃজনের অজুহাতে বনের জমি বেদখল করে নিয়েছে দখলদাররা। ফলে দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে আসছে বনের জমি। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জের আওতায় বনের জমি রয়েছে ৮৮০২.৮১ একর। তন্মধ্যে বেদখল দেখানো হয়েছে ১৪২৬.৫ একর। কিন্তু বাস্তবে বেদখলের পরিমাণ হবে দিগুণ। এসব বেদখলীয় জমি উদ্ধারের বিষয়ে আদালতে মামলাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু বনের জমি উদ্ধার হয়নি। বর্তমানেও বনের জমি দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে নয়াপাড়ায় সামাজিক বনের গাছসহ ২০ শতাংশ জমি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ওই জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ আখ চাষ করে দখল করে নিয়েছে বনের জমি। বাকাকুড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, বাবু ও মুসাসহ আরো অনেকেই বনের প্রায় ২০ একর জমি দখল করে আখ চাষ ও বৃক্ষ রোপণ করেছে। অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই বেদখল হচ্ছে বনের জমি। এসব দেখার যেন কেউ নেই। উদ্ধারের বিষয়ে নেই কোনো তৎপরতা। এ বিষয়ে জানতে রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ ও শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে ফোন দেয়া হলে তারা ফোন ধরেননি। ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনম আব্দুল ওয়াদুদ এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত