দাবদাহে চায়ের উৎপাদনে বিপর্যয়

প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

তীব্র দাবদাহে মৌসুমের শুরুতেই মৌলভীবাজারে চা বাগানে বিপর্যয় নেমে এসেছে। অনাবৃষ্টিতে চারাগাছ মরে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে নানা রোগবালাই। এতে অর্ধেকে নেমেছে উৎপাদন। চা পাতা উত্তোলনের এখন ভরা মৌসুম। তবে বৃষ্টির অভাবে মাটি থেকে রস সংগ্রহ করতে পারছে না গাছ। এতে নতুন কুঁড়ি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। মৌসুমের শুরুতে এমন বিপর্যয়ে চা উৎপাদনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কিত চা বাগান সংশ্লিষ্টরা। চা বাগান সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের প্রায় সব বাগানেই একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। খরায় পাতা মোড়ানো রোগ ও রেড স্পাইডারের সংক্রমণ বেড়ে চলছে। সবুজ চা পাতা লাল বর্ণ ধারণ করেছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চা শ্রমিক নেতা দীপংকর ঘোষ বলেন, খরায় বেশি পাতা তোলা যাচ্ছে না। শ্রমিকরা ১০ থেকে ১৫ কেজি করে পাতা তুলছেন। অথচ অন্য বছর এসময় ২০ থেকে ২৫ কেজি পাতা তুলেছেন তারা। আগের মতো কারখানাও ঠিকমতো চলছে না। কোনোমতে একবেলা চলে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় চা উৎপাদনে দুর্দিন চলছে।’ দীর্ঘ খরায় উল্লেখযোগ্য হারে চা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগানের ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, নানা রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে। বাগানগুলোতে সদ্য লাগানো চারাগাছ মরে যাচ্ছে।

এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। রাজনগরের ইটা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আদিল আহমেদ বলেন, মৌসুমের শুরুতেই চা উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বৃষ্টির প্রভাবে চা উৎপাদনে প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলার মাথিউরা চা বাগানের চা বিশেষজ্ঞ আবু সাইদ বলেন, প্রচণ্ড খরায় চা উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কুঁড়ি শক্ত হয়ে যাওয়ায় পাতা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমে গাছের নিচের মাটি শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় চা গাছ খাদ্য তৈরি করতে পারছে না। তীব্র খরায় রেড স্পাইডারের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়া পরিবর্তন না হলে এ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এতে চা উৎপাদনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।