কিশোরগঞ্জে লিচুর নাম মঙ্গলবাড়ীয়া!

প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শাহজাহান সাজু (কিশোরগঞ্জ)

গ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, প্রতিটি ছোট বড় রাস্তার দুই পাশে সারি সারি লিচু গাছ। প্রতিটি গাছেই রক্তিম বর্ণের টকটকে রসালো পাঁকা লিচু ঝুলছে। বাদ নেই গ্রামের বাড়ির আঙিনাসহ পুকুর পাড়, এমনকি ফসলি জমিও। এ যেন লিচুর রাজ্য। প্রথমবার কেউ এ গ্রামে এলে চোখ জুড়ানো এমন দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়াবে। শত বছর ধরে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ এলেই এমন মন-মাতানো দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামে। জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে এ লিচু গ্রামের অবস্থান। কালক্রমে গ্রামের নামানুসারে লিচুর নামই এখন ‘মঙ্গলবাড়ীয়া’ লিচু।

এ লিচুর স্বাদ বাজারে অন্যান্য লিচুর চেয়ে ভালো। পাশাপাশি মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু আগাম জাতের হওয়ায় অন্যান্য লিচু বাজারে আসার ১৫ দিন আগেই বিক্রি শুরু হয়। তাই মৌসুম এলেই জেলার সবকটি উপজেলার মানুষসহ দূর-দূরান্ত থেকে এ গ্রামে ছুটে আসেন লিচুপ্রেমী পর্যটকটরা।

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে এ লিচু গ্রামে আসা সুইটি আক্তার বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে এ নিয়ে তিন মৌসুম ধরে আসা। ঘুরে ঘুরে দেখছি, যে গাছের লিচু বেশি পছন্দ হবে, সে গাছ থেকে লিচু কিনব।

নিকলী উপজেলা থেকে আসা ইমদাদ খান বলেন, মৌসুম এলেই অন্যান্য জেলার আত্মীয়স্বজনদের বাড়ি পাঠাতে এবং নিজের পরিবারের জন্য মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু কিনতে আসি।

লিচু চাষি মো. ছফির উদ্দিন জানান, আমার ২০০ লিচু গাছ রয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে এবার। বিক্রি শুরু করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ১০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে। আমাদের লিচু বাজারে নিতে হয় না। পর্যটকরা যারা

ঘুরতে আসেন এখানে তাদের কাছেই বেশিরভাগ লিচু বিক্রি হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ২০০ বছর আগে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের হাশিম মুন্সি চীন থেকে একটি লিচুর চারা এনে তার বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। এ গাছ থেকেই এ উন্নত লিচুর জাত ছড়িয়ে পড়ে সব গ্রামে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. সাইফুল হাসান আলামিন জানান, আগাম জাতের লাভজনক এ মঙ্গলবাড়িয়া লিচুর আবাদ সব জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।