চাঁদপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

৬ মাস ধরে ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুরে বর্তমান সরকারের সময় দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত চেষ্টায় চাঁদপুরের তিনটি স্থানে ২০১২ সাল থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের মধ্যে একটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় ও আরো দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বেসরকারি ব্যবস্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করেন দেশ এনার্জি নামক কোম্পানি ও ১১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করতে সক্ষম হন ডরিন পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড নামে একটি সংস্থা। বর্তমানে বেসরকারি দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালু থাকলেও সরকারিভাবে নির্মিত ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রায় ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে সরকারি অর্থয়ানে নির্মিত চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। সংস্কারের জন্য চুক্তি ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আসার পর আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ পুনরায় এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন চালুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে দায়িত্বরত প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে। ২০১২ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়। এরপর এবারই প্রথম দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুল আবছার বলেন, রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়। মূলত এখানে ৫০ ও ১০০ মেগাওয়াট আলাদাভাবে উৎপাদন হয়। ১০০ মেগাওয়াটের ইউনিট ৫০ দিন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের পরে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি চালু করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে একটি গ্যাস বুস্টার চালু না হওয়ায় আমরা আর উৎপাদনে যেতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, গ্যাস বুস্টারটি আমরা দেশীয় লোকবল এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে সচল করার চেষ্টা করি। আসলে এরকম সূক্ষ্ম কাজ করতে হলে বিদেশি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। গ্যাস বুস্টারটি ঠিক করার জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। আগামী সেপ্টম্বর-অক্টোবর নাগাদ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ দেশে আসবে। তখন আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে পারব বলে আশাবাদী রয়েছি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৮৫ মেগাওয়াট রয়েছে। আর গ্রামের বিদ্যুৎ সরবার করে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২। শহরের চাহিদা ৮০ মেগাওয়াট, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২ এর চাহিদা ১০৫ মেগাওয়াট। তবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংকট থাকায় চাঁদপুরে চাহিদার তুলনায় মাত্র ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। যার কারণে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং দেখাতে হচ্ছে। এদিকে, গত দুই সপ্তাহ বিদ্যুতের ধারাবাহিক লোডশেডিংয়ের কারণে শহর ও গ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সবাই।