ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নাকুগাঁও গণহত্যা দিবস আজ

নাকুগাঁও গণহত্যা দিবস আজ

১৯৭১ সালের ২৫ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডালু এবং শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের নাকুগাঁও সীমান্ত (বর্তমান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন পয়েন্ট) এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বর্বরোচিত হামলা চালায়। অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের অসংখ্য নিরীহ মানুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পাকিস্তানি হায়েনাদের হামলায় নিহত হওয়া ৯ জন বিএসএফের হিসেব জানা গেলেও নিহত বাংলাদেশিদের সঠিক পরিসংখ্যান আজো জানা যায়নি। তবে ভারতের অংশে ওই দেশের ৯ বিএসএফ সদস্যের স্মরণে সম্প্রতি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও বাংলাদেশে অংশের সেই নৃশংস স্মৃতি বিজরিত স্থানটি আজও অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও কেবলমাত্র বিএসএফের বাধার কারণে সেই গণহত্যার স্থানটিতে স্মৃতি ফলক বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুঁগাও এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডালু সীমান্তের তৎকালীন কিল্লাপাড়া ১১১৬নং পিলার-সংলগ্ন বিএসএফ ক্যাম্পের পাশেই ছিল শরণার্থী শিবির। একাত্তরের মে মাসের ২৫ তারিখ পাকিস্তানি সেনারা স্থানীয় ভোগাই নদীর তীর ঘেষে গিয়ে সেই স্মরণার্থী শিবিরকে মুক্তিদের স্থান ভেবে অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি সেনারা মর্টারসেল ও গুলিবর্ষন করতে করতে ভারতের ভিতর প্রবেশ করে ৯ জন মিত্র বাহিনী ভারতের সীমান্তরক্ষী ৯ বিএসএফ সদস্যসহ অগনিত মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভারতীয় সেনাবাহিনী এগিয়ে এলে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটে। কিন্তু ততক্ষণে ভারত-বাংলাদেশের দুই দেশের সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডের মাটি এবং ভোগাই নদীতে রক্তের বন্যা বয়ে যায়।

এ বিষয়ে শেরপুরের সিনিয়র সাংবাদিক দেবাশিষ সাহা রায় জানান, আমি সেদিন ডালুর পাশেই বারাঙ্গাপাড়ায় ছিলাম। মুহুর্মুহু গুলি আর মর্টার সেল এর শব্দ শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত নাকুগাঁও বধ্যভূমিটি। গত ১০ বছর পূর্বে ভারতীয় অংশে সেদেশের ৯ বিএসএফ’র স্মরণে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হলেও বাংলাদেশের শহীদদের স্মরণে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ তো দূরের কথা স্থানটিকে চিহ্নিও করা হয়নি আজো। ফলে হতাশ হয়ে পড়েন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারাণ মানুষ। তারা চায়, দ্রুত সেই স্থানটিতে একটি স্মৃতিসৌধ অথবা স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হোক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত