লক্ষ্মীপুরেই তৈরি হচ্ছে ফিশিং ট্রলার

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে তৈরি হচ্ছে সব ধরনের ছোট-বড় নৌকা ও সমুদ্রে চলাচলকারী ফিশিং ট্রলার। এ পেশায় নিয়োজিত কারিগরদের কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ না থাকলেও অভিজ্ঞতা দিয়েই বছরে প্রায় চারশ ট্রলার তৈরি করছেন তারা। এতে করে এ অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে ট্রলার ও নৌকা তৈরির কয়েকজন কারিগর, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টরা জানালেন, বছরে এ খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় দুইশ কোটি টাকা। জানা যায়, সমুদ্রে মাছ ধরার ফিশিং ট্রলারগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও বর্তমানে লক্ষ্মীপুরেই তৈরি হচ্ছে এ যানটি। এতে করে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি এ অঞ্চলের সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এ অঞ্চলে সম্ভাবনাময় এ শিল্পটি বিকশিত হলে আরও কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এদিকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার টাংকি বাজার, চরগাজী, আসলপাড়া, আলেকজান্ডার মাছঘাট, কমলনগর উপজেলার মতিরহাট, ভাঙ্গাপুল, জারিরদোনা, লুধুয়া, ফলকন, পাটোয়ারিরহাট, সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, বেড়ির মাথা ও রায়পুর উপজেলার চরবংশী, হাজীমারাসহ জেলার প্রায় ১৩টি স্থানে ছোট-বড় নৌকা ও সমুদ্রে চলাচলকারী ফিশিং ট্রলার তৈরি করেন কারিগররা। ট্রলার মিস্ত্রি আবুল খায়েরের সঙ্গে কথা হয় আলেকজান্ডারের আসলপাড়ায়। তিনি জানান, আগে ফিশিং ট্রলার থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে কিনতে হতো। এখন স্থানীয়ভাবেই তা তৈরি হচ্ছে। সমুদ্রে চলাচলকারী একেকটি ট্রলার তৈরিতে সময় লাগে প্রায় ৫ মাস। একটি ট্রলার তৈরিতে কাঠের প্রয়োজন পড়ে কমপক্ষে ১২০০ ঘনফুট এবং খরচ হয় ৭-৮ লাখ টাকা। আর প্রতিটি ট্রলারে ইঞ্জিন ও জালসহ খরচ পড়ে ৮০ লাখ থেকে প্রায় কোটি টাকা। সমুদ্রে চলাচলকারী ফিশিং ট্রলারগুলো ৫৬ ফুটের বেশি লম্বা এবং প্রায় সাড়ে ১৬ ফুট প্রস্থের হয়। এসব ট্রলার তৈরিতে আমদানি করা বিদেশি লোহা কাঠ, ওক এবং চাপালিশ কাঠ ব্যবহৃত হয়। মতিরহাট মাছ ঘাটের মাছ ধরার নৌকার মালিক এমরান জানান, দেশি কাঠের তৈরি ট্রলার ৮-১০ বছর টেকে। আর আমদানিকৃত কাঠের তৈরি ট্রলার ১৫-২০ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। লক্ষ্মীপুরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানালেন, জেলায় অনুমোদিত সরকারি বা বেসরকারি কোনো ডকইর্য়াড নেই। লক্ষ্মীপুরে স্থানীয়দের উদ্যোগেই ট্রলারগুলো তৈরি হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে প্রায় ৩ হাজার অনুমোদিত ফিশিং ট্রলার রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।