দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করেন অনেকেই। এ লড়াইয়ে হেরে যান কেউ কেউ। তবে যাদের দরিদ্রতা দমাতে পারেনি তাদের একজন ময়মনসিংহের ত্রিশালের আজাহার উদ্দিন। স্থানীয়দের কাছে কবি আজাহার উদ্দিন নামে পরিচিত, বাসে ফেরি করা সেই দরিদ্র ছেলেটি আজ বিখ্যাত হয়ে উঠেছে চা বিক্রি করে। তার রাজা ব্যান্ডের চা পরিচিতি পেয়েছে সারা দেশজুড়ে। নাড়ির টানে এবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মজয়ন্তীর নজরুল গ্রামীণ মেলায় সবার নজর কেড়েছে তার ‘রাজা চা’। ছিল লাইন ধরে চা পানের দৃশ্য।
আজাহার উদ্দিনের বাড়ি ত্রিশাল পৌরশহরের নওধার গ্রামে। বাবা আলীম উদ্দিনের অভাবের সংসারে তার জন্ম। খুব একটা পড়ালেখার সুযোগ পাননি। আজাহার বাসে ফেরি করে পণ্য বিক্রিসহ নানা কাজ করত। একসময় স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে আর ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে আজাহার পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে। তখনও কিন্তু দুর্ভাগ্য তার পিছু ছাড়েনি। কেননা, দালাদের দেয়া তার ভিসাটি ছিল অবৈধ। আবুধাবিতে পালিয়ে বেড়ানো জীবনের অধ্যায়ে এক হোটেলে কাজ করতে গিয়ে শিখেন চা বানানো। এরপর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ২০১৯ সালে দেশে ফিরে আসে আজাহার। ‘রাজা চা’ নামকরণ করে ঢাকায় একটি চায়ের দোকানের মাধ্যমে কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, হরলিকস, ম্যাটকফি, ব্ল্যাক কফি, কিশমিশ, চিনি, গুঁড়ো দুধ, কনডেন্স মিল্কের মিশ্রণে তৈরি চা বিক্রি করে তার আজকের এই খ্যাতি।
তার ইন্ডিয়ান মাসালা টি’তে তেজপাতা, এলাচ, লবঙ্গ, হরলিকস, গুঁড়ো দুধ, কনডেন্স মিল্ক ও ম্যাটকফি যুক্ত থাকে। ইরানি, জাফরানি, ইন্ডিয়ানসহ দেশ-বিদেশের ১৫২ প্রকারের চা বিক্রি করেন তিনি। দেশের ১৮টি রাজা চায়ের দোকানে ৬৫ জন কর্মী কাজ করেন। যাদের প্রতিজন ১২ থেকে ২২ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছে।
এবার নিজ এলাকায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মজয়ন্তীর নজরুল গ্রামীণ মেলায় বসেছে তার ‘রাজা চা’ এর স্টল। সবার নজর কেড়েছে রাজা চা।
আজাহার বলেন, নাড়ির টানে ত্রিশালের নজরুল গ্রামীণ মেলায় বসিয়েছি আমার রাজা চায়ের স্টল। বেশ সাড়াও পাচ্ছি।