৫২ জাতের আম চাষ করে সফল

প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী)

ল্যাংড়া, গোপালভোগ, মরিয়ম, খিরসা, মধুরানী, হিমসাগর কিংবা হাঁড়িভাঙা- এসব তো রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রংপুর এলাকার আম। তবে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সোলায়মান প্রমাণ করেছেন, যত্ন নিলে সোনাগাজীতেও এসব আম ফলানো সম্ভব। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রায় ৫২ জাতের আম আছে তার বাগানে। বাগানে নানা জাতের আম লাগিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি তিনি, জাত উন্নয়নে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

১৯৯২ সালে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকায় প্রায় ৭০ একর জমিতে সোয়াস এগ্রো কমপ্লেক্স নামের সমন্বিত খামার প্রতিষ্ঠা করেন মো. সোলায়মান। খামারে মাছ চাষ ও গবাদিপশু পালনের পাশাপাশি কোনো ধরনের কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত উপায়ে ফলের বাগান করছেন তিনি। বাগানের তিন হাজার আমগাছে এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া বাগানে আমের পাশাপাশি কাঁঠাল, উন্নত জাতের কলা, পেঁপে, নারিকেল, ড্রাগন ফল, তীন ফল ও জামরুলের চাষও করেছেন তিনি।

সোনাগাজী উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বড় ফেনী নদীর তীরে মুহুরী সেচ প্রকল্পের পাশে মেজর সোলায়মানের খামারের অবস্থান। প্রকল্পের পাঁচ একর জায়গায় তিনি গড়ে তুলেছেন আমের বাগান। সম্প্রতি তার খামার প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, মাছ চাষের জন্য খনন করা বিশাল পুকুরের দুই ধারে আমগাছের সারি। গাছে গাছে ঝুলছে নানা প্রজাতির আম। একেক জাতের আমের গড়ন একেক রকম। কোনোটি গোল আবার কোনোটি লম্বা।

মেজর অব. সোলায়মান জানান, খামারে প্রায় ৪ হাজার আমের গাছ আছে। এ বছর আরো ৫০০ চারা লাগাবেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা এসে তার বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যান। ৯ বছর ধরে আম বিক্রি করছেন তিনি। এ মৌসুমে সব মিলিয়ে ৩০ টনের মতো আম বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন।

এসব আম খুবই মিষ্টি এবং সুস্বাদু। প্রতি কেজি আম ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে বিক্রি করছেন তিনি।

এছাড়া এই বাগানে হানিডিউ, আলফানসো, রুবি, দোসারি ও রাঙ্গুয়াই, পলমার, তোতাপুরী, ব্রুনাই কিং নামের বিদেশি জাতের আমও ধরেছে বাগানে।

সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সোলায়মান বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমের চাষ করেন না। অথচ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করলে এসব জাতের আম এখানে ভালো ফলবে। তার প্রমাণ আমার এই বাগান।

তিনি আরো বলেন, তার বাগানের আমে কোনো ধরনের কীটনাশক নেই। এছাড়া গাছে ইউরিয়া সার দেয়ার পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করেন বলে তিনি জানান। আম ক্রয় ও চাষবিষয়ক যে কোনো পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তার খামারে ভিড় জমান।