ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সরকারি রাস্তায় বেড়া দুর্ভোগে জনগণ

সরকারি রাস্তায় বেড়া দুর্ভোগে জনগণ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত মাটির রাস্তায় বেড়া দিয়ে জনগণের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে লকিয়ত উল্যাহ নামের এক সাবেক ইউপি সদস্য ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে। উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব করপাড়ায় নাপিত বাড়ির সামনে শ্যামপুর সড়কে এ বেড়া দেয়া হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ সাবেক ইউপি সদস্য ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে ভাতার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাক্ষী দেয়ায় ক্ষিপ্ত তিনি জনগণের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়ে হয়রানি করছে। ভুক্তভোগী লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, জনগণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কটির ইটের সলিংকরণের কাজ শুরু করে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

কিন্তু সাবেক ইউপি সদস্য ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে রাতের আঁধারে সড়কের মুখে বেড়া দেন। স্থানীয় কয়েকজন লোক জানান, সাবেক ইউপি সদস্য কতিপয় ব্যক্তিদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ করেন এবং বিগত কয়েক বছর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে তা আত্মসাত করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে এলাকাবাসীর সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। পরে সমাজসেবা কার্যালয়ের তদন্ত কর্মকর্তা ও সমাজসেবা অফিসার আনোয়ার হোসেন বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে উত্তোলনকৃত ভাতার টাকা ফেরত (রি-ফান্ড) দেয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য লকিয়ত উল্যাহর ছেলে সেলিম মিয়া চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, রাস্তাটি সম্পূর্ণ আমাদের জায়গার উপর দিয়ে গেছে। আমরা আগে তাদের চলাচলের জন্য দিয়েছি; কিন্তু স্থায়ীভাবে পাকাকরণের জন্য দেয়া হয়নি।

করপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহীদ মীর্জা বলেন, সড়কে বেড়া দিয়ে এবং চারাগাছ লাগিয়ে মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অধিকার কারও নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উভয়পক্ষের সঙ্গে বসে সমাধান করা হবে। তবে কে কার কাছে চাঁদা চেয়েছে তা আমার জানা নেই।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে সাবেক ইউপি সদস্য লকিয়ত উল্যাহ নামের এক লোক নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ২০১৬ সালের পর তা প্রমাণিত হওয়ায় আমরা লকিয়ত উল্যাহকে ভাতার টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। তার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা এককালীন পরিশোধ করলেও বাকি টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারব আত্মসাতকৃত ভাতার টাকা সে রি-ফান্ড করেছে কি না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: শারমিন ইসলাম বলেন, রাস্তায় বেড়া দিয়ে জনসাধারণের চলাচলের বাধা সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। বেড়া তুলে দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে সরকারি ভাতার টাকা আত্মসাত করে, তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত