দেড় বছরেও নির্মিত হয়নি ব্রিজ, শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. রাকিবুল হাসান, দুমকি (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী ভাড়ানি খালের উপর আয়রন ব্রিজটি দেড় বছর আগে ভেঙে পড়ে। তার পর আজ পর্যন্ত ওই ব্রিজ মেরামত না হওয়ায় স্থানীয় হাবিবুল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট খেয়া নৌকায় তাদের প্রতিদিন পারাপার হতে হচ্ছে। অথবা বিকল্প পথে ৪ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

স্থানীয়রা জানান, লেবুখালীর পায়রা নদী থেকে পটুয়াখালীর লাউকাঠি নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ভাড়ানি খালের উপর লেবুখালী হাবিবুল্লা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ২০০৯ সালের দিকে তৈরি করা হয় আয়রন ব্রিজ। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় লোকজন এই ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতেন। ২০১৫ সালে পণ্যবাহী কার্গোর ধাক্কায় ব্রিজটির একাংশ বিধ্বস্ত হলে কয়েক দিন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়ে ভারানি খালটি পারাপার হতে হয় খেয়া নৌকায়। কয়েক মাসের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি এটি মেরামত করে দিলে স্থানীয়রা পারাপারের সুযোগ পায়। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বালুভর্তি একটি কার্গোর ধাক্কায় ব্রিজের অর্ধেকটা দুমড়েমুছরে খালে পড়ে যায়। তখন থেকেই দুইপারের লোকজনের যাতায়াতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দেড় বছরেও ব্রিজটি মেরামত না হওয়ায় বিদ্যালয়ের সহস্রাধীক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে খেয়া নৌকায় পারাপার হতে হয়।

লেবুখালী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম জানান, ১৯৬১ সালে স্থাপিত হাবিবুল্লাহ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালে জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় পার্শ্ববর্তী বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল মৌগ্রাম, দুমকি উপজেলার আলগি নলদোয়ানি লেবুখালিসহ কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের এই খেয়া পারাপার হয়ে বিদ্যালয় যাতায়াত করতে হয়। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেয়া পারাপার হয়ে আসতে হয় অথবা চার কিলোমিটার ঘুরে পাগলা এলাকায় নির্মিত ব্রিজ পার হয়ে আসতে হয় শিক্ষার্থীদের। ব্রিজটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে গেছে বলেও জানান তিনি।

লেবুখালী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, ব্রিজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই মেরামতের জন্য এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবদি মেরামত না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর দুর্ভোগ হচ্ছে। তিনি আরো বলেন এই এলাকায় লেবুখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিস পোস্ট অফিস দুটি বাজারসহ অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীসহ আগত লোকজন ব্রিজ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম তুবা জানান, তিনি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল মৌগ্রাম থেকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন। খেয়া পারাপারে ভয় নিয়ে পারাপার হতে হয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী আক্তার পরশমনি জানান তিনি বদরপুর এলাকা থেকে বিদ্যালয়ে আসেন। ব্রিজটি বিধ্বস্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হয়। ব্রিজটি মেরামত করা হলে যাতায়াতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না বলে জানান তিনি।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিপা জানান ব্রিজটি মেরামতের দাবিতে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত তা মেরামত না হওয়ায় আমরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।