ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের লালগালিচা

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

এ যেন লালের সমারোহ। পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ, ডানে-বামে এবং সামনে-পেছনে সর্বত্রই লালে লাল। এ যেন দিগন্তজুড়ে লালগালিচা। কোনো অনুষ্ঠানের চিত্র নয়, এটি ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের ফলন ও ফলনের পরবর্তী পাকা মরিচ শুকানোর চিত্র। এবার চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার হাটবাজারগুলোয় উঠতে শুরু করেছে কাঁচা ও পাকা মরিচ। মরিচের দাম ভালো পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুঁটেছে। আর তাই মরিচ শুকাতে ও মরিচের প্রক্রিয়াকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার কৃষকরা। সরেজমিন দেখা যায়, সদর উপজেলার রুহিয়া রেলস্টেশনসহ প্রতিটি রেললাইনে এখন লাল মরিচের সমারোহ। মরিচ শুকিয়ে বাজারজাত করলে বাড়তি দাম পাওয়া যায়। তাই লাইনের শুকনো মাটির ওপর পাটি বিছিয়ে শুকাতে দেয়া হচ্ছে লাল মরিচ। একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে রায়পুর ইউনিয়নের ভেলাজান এলাকায়। এখানেও মরিচের বাজার ও কৃষকের মাঠ রয়েছে মরিচ শুকানোর। কৃষক ও তাদের পরিবারের লোকজন ও তাদের সহযোগিরা এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখানে চলে পাইকারি মরিচ বেচা-কেনাও। সদর উপজেলার রেলগেট এলাকায়ই প্রতিদিন কয়েকটি এলাকার চাষিরা মরিচ শুকাতে আসেন। এখান থেকেই মরিচ পাইকারি দরে কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ী আকবর আলী জানান, প্রতিদিন এ স্টেশন এলাকা থেকে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার শুকনা মরিচ কেনাবেচা হয়। রুহিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রহমান ১ বিঘা জমিতে বিন্দু ও বাঁশগাড়া জাতের মরিচ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিড়ানি, সেচ ও পরিচর্যা পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মরিচ উৎপাদন হচ্ছে কমপক্ষে ১০ মণ। এবার প্রতি মণ মরিচ ১৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় লাখ টাকা পাওয়া যাবে। কৃষকরা মরিচের রংয়ের ন্যায় লাভে লাল হবে বলেও আশা করেন তিনি। একই এলাকার আরেক কৃষক কোরবান আলী জানান, এ রেলগেট এলাকার প্রায় ৭০ ভাগ কৃষকই মরিচ চাষের সঙ্গে যুক্ত। আমি ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ১ লাখ টাকা খরচ হলেও লাভ থাকবে প্রায় ৩ লাখ টাকা। আর এই মরিচের জন্য অনেক মানুষ কাজ করছেন। অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে এখানে। একই উপজেলার ভেলাজান গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এবার অনেক ভালো ফলন হয়েছে মরিচের। দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, পৌষ মাসে চারা রোপণ করার পর থেকে উৎপাদন পর্যন্ত প্রায় ৬ মাস প্রয়োজন। বিন্দু, সেকা, মাশকারা, মল্লিকাসহ বিভিন্ন জাতের মরিচ হয় এ এলাকায়।