কোরবানির ঈদে পেঁয়াজের দাম থাকবে সহনশীল পর্যায়

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কামরুল হুদা হেলাল, দিনাজপুর

আড়াই মাস পর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর এক দিনেই কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। ১৪ জন আমদানিকারক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র পেয়েছেন। এদিকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য মেয়াদউত্তীর্ণ এলসির মেয়াদ হালনাগাদ করার কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যাংক।

দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদানকারীদের স্বার্থ রক্ষা তথা ন্যায্যমূল্য প্রান্তির নিশ্চয়তার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১৫ মার্চ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়। আমদানির অনুমতিপত্র না থাকায় দেশের খোলা বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ করে যায়। হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের ঝাঁজ। সামনে কোরবানি ঈদের কথা বিবেচনা করে কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজের বাজার ভোক্তাদের জন্য সহনীয় পর্যায় রাখার উদ্দেশ্যে গত শনিবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আমদানি ঘোষণা দেয়। গত রোব ও সোমবার দুই দিনে দেশের অন্যতম স্থলবন্দর হিলি দিয়ে ১০ ট্রাকে পেঁয়াজ এসেছে প্রায় ১৫০ মেট্রিক টন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার ফলে একদিনেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আগামী ১ সপ্তাহ পর যখন বাজারে পুরোদমে ভারতীয় পেঁয়াজ সরবরাহ করা হবে তখন দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কথা।

বর্তমানে দুই দিন আগেও কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। আর একদিন পরেই গত সোমবার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এ দর আরো কমে আসবে। দিনাজপুরের পেঁয়াজের বড় আড়ত বাহাদুর বাজারের ব্যবসায়ী মাহবুব হোসেন, মাজেদুর রহমান ও অলিউর রহমান জানান, এর আগে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে হাটেবাজারে সরবরাহ করতাম। খোলা বাজারে ৯০ টাকা পর্যন্ত পেঁয়াজ কেনাবেচা হয়েছে। কিন্তু সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় এখন পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী কোরবানি ঈদে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে থাকবে। এতে সাধারণ ক্রেতারা বর্তমান বাজারের তুলনায় অর্ধেক দামে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। ব্যবসায়ীরা বলেন অধিক মুনাফার আশায় অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ করেছিলেন। কিন্তু এখন আমদানির ফলে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় তাদের লোকসান গুনতে হবে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন আড়াই মাস পর কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১৪ জন আমদানিকারক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। আগামী ৭ দিনে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ ও আমদানিকারকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, গত ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা হয়। বর্তমানে ১৫০ থেকে ২০০ ডলারে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের কেজিপ্রতি বিক্রয় মূল্য দাঁড়াবে ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

হিলি স্থলবন্দরের উপসহকারী সংঘ নিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, এই বন্দর দিয়ে গত দুই দিনে পেঁয়াজ এসেছে ১৫০ মেট্রিক টন। ক’দিন পর এর পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে। পেঁয়াজ আমদানির ফলে হিলি স্থলবন্দরে কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়ে গেছে। প্রখর দাবদাহ উপেক্ষা করে শ্রমিকরা পচনশীল এই দ্রব্য লোড আনলোডে ব্যস্ত সময় পার করছেন।