ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়

বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়

নওগাঁ ও চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় গতকাল বুধবার বৃষ্টি কামনায় ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নওগাঁ : বৃষ্টি কামনায় নওগাঁয় ইসতিসকার নামাজ আদায় ও দোয়া করা হয়েছে। বেলা ১১টায় স্থানীয়দের উদ্যোগে নওগাঁ শহরের কাঁঠালতলী এলাকায় মার্কাজ মসজিদের পাশের মাঠে নামাজ আদায় ও দোয়া করা হয়। নামাজে ইমামতি করে শহরের দপ্তরিপাড়া কওমি মাদরাসার শিক্ষক মুফতি মিজানুর রহমান।

জ্যৈষ্ঠ মাসের ২৪ দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। এ মাসের শুরুর দিকে ২ দিন সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। তারপর আর বৃষ্টির দেখা মিলছে না। বেশিকিছু দিন থেকে তাপমাত্রার পারদ উঠানামা করছে। জেলায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সারাদেশের ন্যায় বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে জনজীবনসহ প্রাণিকুল অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমে খেটে খাওয়া শ্রমিক ও দিনমজুররা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। প্রচণ্ড গরম থেকে রক্ষা পেতে ও বৃষ্টি কামনায় মুসল্লিরা দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ (বৃষ্টির নামাজ) আদায় করেন। নামাজ শেষে বৃষ্টি কামনায় দোয়া করা হয়। যেখানে প্রায় তিন শতাধিক মুসল্লিরা অংশ নেয়। নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লিরা বলেন- বেশ কিছুদিন থেকে প্রচণ্ড তাপদাহ বইছে। প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে অস্থিরতা নেমে এসেছে। অস্বস্তি বোধ করছে প্রাণিকুল। সূর্যের তাপে প্রকৃতিতে গরম হাওয়া বইছে। আকাশে মেঘের কোনো দেখা নেই। আল্লাহর রহমত বৃষ্টি কামনায় দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়সহ দোয়া কামনা করা হয়েছে। নামাজে ইমামতি মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, বালা-মসিবত দিয়ে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করছেন। এসব বালা-মসিবত থেকে রক্ষা পেতে এবং আল্লাহকে রাজী খুশি করতে নফল নামাজ আদায় করেছি। তারপর আল্লাহর জমিন শীতল করতে রহমতের বৃষ্টি কামনায় দোয়া করা হয়েছে। আল্লাহ চাইলে বৃষ্টি দিয়ে জমিন শীতল করবেন।

মতলব (চাঁদপুর) : চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় টানা কয়েক দিন ধরেই তীব্র্র তাপপ্রবাহ বইছে। গত মঙ্গলবার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে মতলব উত্তরে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে ফসলের মাঠ। গতকাল বুধবার সকালে ছেংগারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি কামনা করে বিশেষ এ নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইত্তেহাদুল ওলামা মতলব উত্তর এ নামাজের আয়োজন করেন। ধর্মমতে, এ নামাজকে বলা হয় ‘ইসতিসকার নামাজ’। এ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বা পানির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

সকাল ১০টার দিকে ছেংগারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পাঞ্জাবি-টুপি পরে জায়নামাজ নিয়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাঠে হাজির হয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নামাজ আদায় ও দোয়া পরিচালনার জন্য হাজির হন মুফতি যাইনুল আবেদীন। প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নামাজের নিয়মকানুন বলেন তিনি। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন সবাই। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে সবাই বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

নামাজ আদায় করতে আসা কয়েকজন বলেন, যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রথমেই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করি। এ নামাজ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে সেই কাজ করা হলো। সৃষ্টিকর্তা রহমত বর্ষণ করবেন বলে আশা করছি।

মাওলানা আতাউল্লাহ মহসিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে বৃষ্টি নেই। অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, গবাদিপশু কষ্ট পাচ্ছে। খেতখামার ও বাগানে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতেই ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী, দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টি ও পানি প্রার্থনা করা হয়েছে।

নামাজ শেষে মাওলানা আবদুল বাতেন বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানির জন্য দোয়া চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্র হয়ে এ নামাজ আদায় করেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত