ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আড়িয়াল বিলে ‘পাথি’ ধানের বাম্পার ফলন

আড়িয়াল বিলে ‘পাথি’ ধানের বাম্পার ফলন

আড়িয়াল বিলে পাথি (মুড়ি) ধানের বাম্পার ফলনে শত শত কৃষক এই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারে তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আড়িয়াল বিলজুড়ে এই পাথি ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শত শত কৃষক দিন-রাত এই ধান কেটে তাদের ঘরে তুলছেন। ইরি (বোরো) ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর সেই ধানের আগা থেকে এই পাথি ধান জন্ম নেয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এই পাথি ধান পেকে যায়। তার পর থেকে অনেক কৃষক এই ধান কেটে পুনরায় ঘরে তুলছেন। পাথি ধান ইরি ধানের চেয়ে একটু চিকন আকারের হয় এবং এ ধানের চালের ভাত খেতে খুবই সুস্বাদু। তাই আড়িয়াল বিলজুড়ে এ ধান কাটতে কৃষকদের মাঝে হিড়িক পড়ে গেছে। এ ধানের মূল্যে ইরি ধানের চেয়ে মণ প্রতি ২-৩ শত টাকা বেশি। একজন কৃষক দিনে ৪-৫ মণ পাথি কেটে ঘরে তুলতে পারেন। যা প্রতি মণ ধানের মূল্য ১২-১৩ শত টাকা।

সরেজমিন আড়িয়াল বিলে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের সমসাবাদ, ষোলঘর, পাকিরাপাড়া, কেয়টখালী, উমপাড়া, পুটিমারা, শ্রীনগর ইউনিয়নের মুন্সীরহাটি, চকেরপাড়া, বাঙ্গাছাড়া, সরকারহাটি, দিঘীপাড়, আরধীপাড়া, কানাইনগর, দয়হাটা মরিচবাড়ী, শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের শ্যামসিদ্ধি, সেলামতি, গাদিঘাট ও মত্তগ্রাম এলাকার প্রায় ৫-৬ শত কৃষক এবং হাসাড়া ও বাড়ৈখালী ইউনিয়নের ৪-৫ শত কৃষক এই পাথি ধান কেটে নৌকা ও মাহিন্দ্র যোগে বাড়িতে তুলছেন। জানা যায়, এবার বেশিরভাগ ইরি (বোরো) ধানে পোকা মাকড় ধরায় ইরি ধানের ফলন ভালো হয়নি। কিন্তু পাথি ধানের বাস্পার ফলন হয়েছে। এবার ইরিধান গন্ডায় অর্থাৎ ৭ শতাংশে ৪-৫ মণ হয়েছে। কিন্তু পাথি ধান গন্ডায় ১ থেকে দেড় মণ হয়েছে। মুন্সীরহাটি গ্রামের স্থানীয় কৃষক মজিবর জানান, আমি ভোরে নৌকা নিয়ে পাথি ধান কাটতে আড়িয়াল বিলে যাই। প্রতিদিন আমি একাই ১ থেকে দেড় মণ পাথি ধান কেটে এ ৫ দিনে প্রায় ৮ মণ পাথি ধান কেটেছি। যার বাজার প্রায় ৯ হাজার টাকার বেশি হবে। এইবার বিলে জোয়ারের পানি দেরিতে আসায় পাথি ধান খুবই ভালো হয়েছে। আমার এই জীবনে বিলে এই রকম পাথি ধানের ফলন আর কোনো দিন দেখিনি। কানাইনগর গ্রামের স্থানীয় কৃষক হাফেজ খান জানান, এবার আমার ইরি ধানের চেয়ে বেশি হয়েছে পাথি ধানের ফলন। ইরিধান বুনতে গিয়ে যা খরচ করেছি সেই তুলনায় অর্ধেক ধান ঘরে তুলতে পারিনি। আর পাথি ধানে কোনো খরচ নেই শুধু কেটে ঘরে তুলছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহসিনা জাহান তোরণ বলেন, মুড়ি ধান এর ফলন ভালো হয় না। সাধারণত হাঁস-মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আড়িয়াল বিলে এ বছর পানি দেরিতে আসায় মুড়ি ধান বেশি দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত