মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি

বলরাম কুটিরের সংষ্কারের দাবি

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নরসিংদী প্রতিনিধি

৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি আজ অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকা ভূতের বাড়ি বললেও ভুল হবে না। চারপাশে জন্মেছে অনেক আগাছা, লতাপাতা। কোথাও খসে পড়ছে দেয়ালের পলেস্তরা। এজন্য দেয়ালের লাল ইটগুলোকে রাক্ষুসের রক্তমাখা দাঁতের মতো মনে হয়। ভেঙে যাচ্ছে নিখুঁত কারুকাজগুলোও। এভাবেই তিলে তিলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলরাম কুটির। দুই তলাবিশিষ্ট বাড়িটির মূল গেটের সামনে কারুকাজ করে লেখা বলরাম কুঠির। স্থানীয় মানুষের কাছে যা বলরাম জমিদার বা বালারাম শাহের বাড়ি নামে পরিচিত। জমিদার বাড়িটির অবস্থান নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে। শুধু জমিদার বাড়ি বলেই নয় ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি লেগে আছে এই বাড়িটিতে। প্রাচীন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বলেই বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বাড়িটি সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ ও সংস্কার করার প্রয়োজন। বিভিন্ন তথ্য সূত্র থেকে জানা যায়, মুক্তাগাছার জমিদার জগত কিশোর আচার্য্য চৌধুরীর বংশের সারদা কিশোরের বাবা কালী কিশোর, দাদা বজ্র কিশোর ছিলেন নারায়ণপুর তল্লাটের মালিক বা জমিদার। পদ্ম কিশোর ভৌমিক (আশু) নামে সারদা কিশোরের এক কর্মচারীর বসবাস ছিল নারায়ণপুরে। ব্রিটিশ আমলে এদের বংশেরই চন্দ্র কুমার সাহা ও বলরাম বাবু নামে দুজন সুদী কারবারি ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছিলেন এখানে। ব্রিটিশ আমলের সেই ধনাঢ্য হিন্দু ব্যবসায়ী স্বর্গীয় বলরাম শাহ গোবিন্দুপর গ্রামে বিশাল আকারের দোতলা এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। আর বাড়ির মালিক বলরাম শাহের নামানুসারে নামকরণ করা হয় বলরাম কুটির। পাকিস্তানিদের দেয়া আগুনে শাহের বাড়িটির ইটের দেয়াল ও কাঠের দরজা-জানালায় এখনো লেগে আছে আগুনে পোড়া কালো চিহ্ন। বলরাম শাহের বাড়িটির প্রয়োজনীয় সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন বলে মনে করে এলাকাবাসী। বেলাব উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আ. ওহাব প্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাড়িতে আমার যুদ্ধকালীন অনেক স্মৃতি লুকিয়ে আছে। বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে সরকারিভাবে সংরক্ষণ ও সংস্কার করা প্রয়োজন। বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।