মিশ্র পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ

সফল মৎস্য ব্যবসায়ী মফিজ

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামে সাদা মাছের সাথে মিশ্র পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মো. মফিজুর রহমান। সাদা মাছ ও গলদা চিংড়ি একই সাথে চাষ করে লাভবান হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই মিশ্রপদ্ধতির মৎস্য চাষ। তিনি জানিয়েছেন, সাদা মাছ যেমন, রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলবর মাছের সাথে গলদা চিংড়ি চাষ করলে ঝুঁকি কম থাকে। যে কারণে এ চাষে ঝুঁকি কম থাকে এবং লোকসানের আশঙ্কা কম থাকায় অধিক লাভবান হওয়া যায়।

মৎস্য ব্যবসায়ী সাংবাদিক মফিজুর রহমান দপ্তরি জানান, মে-জুন মাসে সাগরে প্রচুর পরিমাণে গলদা চিংড়ি পোনা জন্মায়। সেই রেণু-পোনা আহরণ করে তা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিক্রি করা হয়। এই রেণু-পোনা প্রতি পিচের দাম নেয় ২ থেকে ৩ টাকা। আবার একটু বড় সাইজ হলে তার ক্রয় মূল্য ৫ থেকে ৭ টাকা হয়। সেই রেণু-পোটা মৎস্য ঘেরের নিদিষ্ট নিরাপদ কোনে ছোট জায়গা গভীর করে প্রায় ৩ থেকে ৫ ফুট পানিতে ছাড়তে হয়। এ সময় খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ডিমের কুসুম, গম বা ভুট্টার গুঁড়া কিংবা ডিমের কুসুমের সাথে মিশিয়ে ছোট ছোট কনা তৈরি করে সেগুলো দিয়ে নার্সিং করা হয়। ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর ওই রেণু পোনা যখন একটু বড় হয়, তখন পকেট খুলে সমস্ত ঘেরে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় খাবার হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানির জিরো ফিড ব্যবহার করা হয়। এর ১ থেকে ২ সপ্তাহ পর ওই পোনার মধ্যে একটু বড় সাইজ অর্থাৎ প্রতি কেজিতে ৩-৪ পিচ হয় এমন বিভিন্ন প্রজাতীর সাদা মাছ আনুপাতিক হারে ঘেরে দেয়া হয়। তখন সাদা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কোম্পানির ফিডসহ নানা জাতীয় সুসম দানাদার খাবার। পাশাপাশি সময়ে সাথে সাথে চিংড়ির রেণু-পোনার খাবারের তালিকায় পরিমাণ ও সাইজ বাড়তে থাকে। এভাবে প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস পর্যন্ত প্রতিদিন খাবার খাইয়ে নার্সিং করতে হয় এবং প্রয়োজন মতো ওষুধ, সার, খৈলসহ নানা জাতীয় প্রোটিন খাবার ব্যবহার করা হয়। তিনি আরো জানান, মাঝেমধ্যে মাছ ধরে চেক করতে হয়, কোন প্রকার ভাইরাজের আক্রমণ হয়েছে কি না। এছাড়া সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে একটি আদর্শ মৎস খামার হিসেবে পরিগণিত হয়। তাছাড়া ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি জানান, যেহেতু চিংড়ি মাছের রোগবালাই বেশি হওয়ায় লোকসানের আশংকায় এ চাষ থেকে দুরে থাকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে এই পদ্ধতিতে চাষ করা হলে লোকসানের আশঙ্কা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু মিশ্র পদ্ধতির চাষ, তাই যদি কোনো কারণে চিংড়ি মাছ কোনো ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাদা মাছে ওই লোকসান পুশিয়ে দিয়ে যায়। যার কারণে মৎস্য চাষীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কম থাকে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে মৎস্য চাষীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম থাকে।