২০ বছর ধরে পড়ে আছে ব্রিজ

ভোগান্তিতে ৮ গ্রামের হাজারো মানুষ

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. ইসহাক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)

সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বেওয়ারিশের মতো একটি সেতু এখনও অসম্পূর্ণ পরে আছে। সংযোগ সড়কবিহীন এ সেতুটির দায় নিচ্ছে না কোনো দপ্তর। নির্মাণের দীর্ঘ ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও মানুষের কাজে আসছে না সেতুটি। ভারী জিনিসপত্র নিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। ভোগান্তিতে পরেছে পুলিশ-প্রশাসনও। গাড়ি ব্যবহার করতে না পারায় কোনো ঘটনা ঘটার পরে, সেখানে পৌঁছতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ সমস্যায় পরে যায়। ফলে সেতুটি নির্মাণের সুফল ভোগ করতে না পারায় ভোগান্তিতে ৮ গ্রামের মানুষসহ পুলিশ প্রশাসনও।

উপজেলার মাইজবাগ ও মগটুলা ইউনিয়ন এলাকায় দুই প্রখ্যাত জলাশয় হচ্ছে কাতলা বিল ও শিঙ্গা বিল পারের মানুষের দুর্দশার ছবি বরাবরের। এ রাস্তা ব্যবহার করা গ্রামগুলো হচ্ছে- বানাশ্রম, ভাসা গকুলনগর, চরশংকর, কদুখালি, সাধরগোলা, রঘুদেরপুর, কর্মা, বল্লবপুর এলাকার মানুষজন। শুকনো মৌসুমে বিল দুটির মাঝখান দিয়ে পায়ে হেঁটে এবং বর্ষায় অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে যাতায়াত করতে হয় সেতুর এপার ওপারের গ্রামের মানুষের। অথচ মাত্র তিন কিলোমিটার পারি দিলেই ময়মনসিংহ- কিশোরগঞ্জ সড়কে আসতে পারে ওই সব গ্রামের লোকজন।

সেতুটি ব্যবহারকারী ৮ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে ২০০৩ সালে দীর্ঘ তিন কিলোমিটার ব্যাপী একটি নতুন রাস্তা ও রাস্তার ওপর আইএফএডির অর্থায়নে ৬ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।

সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সেতু নির্মাণের সময় রাস্তায় নতুন মাটির সঙ্গে সেতুটির বালেন্স থাকলেও বর্ষায় তলিয়ে গিয়ে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেতুর সঙ্গে রাস্তার সংযোগস্থল ধরে যায়। এরপর থেকে দীর্ঘ ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। খানাখন্দে ভরা রাস্তা আর সেতুর সংযোগ স্থলের বেহাল দশায় কোনো যান চলাচল করতে পারছে না। ফলে সেতুটিও এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। বানাশ্রম গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী স্থানে সেতুটি হওয়ায় দুই ইউনিয়নের কেউ রাস্তাটির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। মগটুলা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ মো. শিহাব উদ্দিন আকন্দ বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন সেতু আছে বলে আমার জানা নেই। সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা করব। উপজেলা প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ বলেন, সেতুটি আমাদের না, সংযোগ সড়ক ছাড়া এলজিইডি’র সেতু হয় না। সেতুটি অন্য ডিপার্টমেন্টের হতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের নির্মিত কোনো সেতুর সংযোগ সড়ক নেই, এমন কোনো ব্রিজ নেই। ২০ বছর আগে সংযোগ সড়ক ছাড়া আমাদের আওতায় কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে কি-না, আমার জানা নেই।