স্কুলমাঠ ভরাটের টাকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হাসান মামুন, পিরোজপুর

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পূর্ব চণ্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের সরকারি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা তদন্তের মাধ্যমে ওই জালিয়াতির বিচার দাবি করেন। এলাকাবাসী এ বিষয় ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিচার ও তদন্ত দাবি করে একটি লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন। সরেজমিন উপজেলার চণ্ডিপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ৬৯নং পূর্ব চণ্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে ডোবা, জলাশয় ও নিচু জমির অধিকাংশ স্থানে কোনো বালু দিয়ে জমি ভরাট না করে নতুন বিদ্যালয় ভবনের চারপাশে সামান্য কিছু বালু ফেলানো হয়েছে প্রায় এক মাস আগে। বাকি জায়গা বর্ষা এলেই থৈ-থৈ আকার ধারণ করে।

জানা যায়, পিরোজপুর-২ আসনের এমপি গত মার্চ মাসে ওই বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য এক লাখ টাকার বরাদ্দ দেন। সে অনুযায়ী ৫ সদস্যের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। পরবর্তীতে মাঠ ভরাটের তৈরি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কাগজপত্রে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ধরা পরে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির ওই ভুয়া কাগজপত্রে বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক রেবা আক্তারকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি খানমকে প্রকল্প সেক্রেটারি, সমাজ সেবক হিসাবে মিরাজুল ইসলাম ও ফিরোজ হোসেনের নাম জালিয়াতির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, এসব জালিয়াতি চক্রের প্রধান, সরকারি অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত এবং চণ্ডিপুর ইউপির তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রী রেবা আক্তার বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সুবাদে মিরাজুল সব সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়ের সভার কার্য বিবরণী বই তার মাধ্যমে গোপনে বাহিরে নিয়ে ফটো কপি করে নিজে (মিরাজুল ইসলাম) এবং নিজের স্ত্রী রেবা আক্তারসহ কয়েকজনের নাম জাল স্বাক্ষর করে উপজেলা নির্বাহী অফিসে জমা দিয়ে প্রথম কিস্তির অর্ধলক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মনিয়ারা আক্তার হ্যাপী অভিযোগ করে বলেন, মিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। সে স্থানীয়দের জিম্মি করে জন্ম নিবন্ধনের নামে নির্ধারিত ফির চেয়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বেশি নিত। এ বিষয় সরেজমিন ইন্দুরকানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম (পিআইও) জানান, তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা ও সরকারি অর্থ আত্মসাতকারী মিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন চাপের মুখে পড়ে আত্মসাৎ করা ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে পিআইও অফিসে এসেও জমা দিতে পারেনি। অভিযুক্ত মিরাজুল ইসলাম জানান, আমি বালু ভরাট প্রকল্পের আইনকানুন সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না, আমার স্ত্রী রেবা আক্তার কীভাবে প্রকল্প কমিটির সভাপতি তা বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি বলতে পারবে।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. জাকির হোসেন জানান, আমি শুনেছি বালু ভরাটের কিছু টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেয়া হবে। এটা বিধিসম্মত হবে না, তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেবা আক্তার কীভাবে প্রকল্প কমিটির সভাপতি হয়েছে তাও তিনি জানেন না। একইভাবে মিরাজুল ইসলামও কীভাবে প্রকল্প কমিটিতে রয়েছেন সে বিষয়েও তিনি জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।