খাল খননে জমি হারাচ্ছেন কৃষক

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বখতিয়ার রহমান, পীরগঞ্জ (রংপুর)

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল খনন কর্মসূচির কারণে ব্যক্তিগত জমি হারাচ্ছে পীরগঞ্জের অনেক কৃষক। এ ব্যাপারে কৃষকরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও ফল পাচ্ছেন না। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার শানেরহাট ও পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের শাটেক-বাটেক খাল এবং টুকুরিয়া ইউনিয়নে কথিত মরা নদী খননের ক্ষেত্রে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জের সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের পরিপ্রেক্ষিতে পাউবো পীরগঞ্জে যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৪২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য খাল/নদী খননের নক্সা প্রস্তুত করে। এতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা। ঠাকুরগাঁও জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স মো. জামাল হোসাইন’ নক্সানুযায়ী পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হিলি মৌজায় সাটেক-বাটেক খালটি খনন শুরু করে। খালটির অংশ হিসেবে শানেরহাট ইউনিয়নের রাউৎপাড়া গ্রামের বিধবা আবেদা বেগম এবং তার ভাসুরের নিজস্ব জমিও খাল খননের আওতায় নিয়ে আসা হয়। অথচ সিএস ও এসএ রেকর্ডের মৌজার মানচিত্রে ওই জমিতে নদী, খাল, জলাশয় বা খাস জমির অস্তিত্ব নেই। খননের সময় আবেদা বেগমের পুত্রবধূ শায়লা বেগম, তাদের বর্গাচাষি হায়দার আলীসহ কয়েকজন বাধা দিলেও ঠিকাদারের লোকজন নানা হুমকি দিয়ে খালটি খনন করে। এতে তাদের প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে খনন এবং মাটির স্তূপ করা হয়। এ ঘটনায় আবেদা বেগমের ছেলে আছাদুর রহমান রংপুর পাউবোসহ বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেও কোনো ফল পাননি।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হিলি গ্রামের হায়দার আলী বলেন, আমরা আমাদের আবাদী জমি রক্ষার চেষ্টা করেও সফল হতে পারছি না। ঠিকাদারের লোকজন জোরপূর্বক আমাদের নিজস্ব জমি খনন করছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্সইএন) রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা ডিজাইন পেয়ে খনন করছি। ক্ষতিগ্রস্তের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের তদন্ত করা হয়েছে।

রংপুর পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, লোকবল কম থাকায় প্রতিটি এলাকায় গিয়ে যাচাই-বাছাই করে নক্সা তৈরি সম্ভব হয়নি। তাই কৃষকের কিছু জমি খাল খননের আওতায় এসেছে। আমরা এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছ থেকে অভিযোগও পেয়েছি। তদন্তও করা হয়েছে। এখন কিছুই করার নেই। তবে খননের সময় বাধা দিলে কৃষকরা উপকৃত হতেন।