গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত কামারপাড়া

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. মাসুদ রানা মনি, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)

ঈদকে সামনে রেখে রামগঞ্জের কামারপাড়া সরব হয়ে উঠেছে। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই তাদের ব্যস্ততা বেড়েই চলেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের এই ব্যস্ততা। মনে হয় যেন এই ঈদটির জন্যই তারা বসে থাকে সারা বছর। নীরব পরিবেশে হঠাৎ করেই কানে ভেসে আসছে টুংটাং আওয়াজ। নিঃশব্দ পরিবেশটাকে ছাপিয়ে চলছে কামারের হাতুড়ি আর হাঁপড়ের আওয়াজ। মনে হয় তারা জানান দিচ্ছে ঈদ এসে গেছে আর বেশি দেরি নেই।

রামগঞ্জের স্বপন কুমার বলেন, এখনও মানুষের ছোরা-চাপাতি কেনা শুরু করেনি। মূলত গরু বিক্রির ওপরই আমাদের বেচা-বিক্রি নির্ভর করে। গরু কেনা যখন খুব জমে, তখন ছোরা-চাপাতি কেনার জন্য মানুষ ভিড় করে। অনেকেই আবার পুরাতন ছোরা ধার দিতে আসেন। আর জবাই করার ছোরা সাধারণত মাদরাসার হুজুররাই কেনেন। আগের বছর জবাই দেয়ার পর গত ১ বছরে আর কাজে লাগেনি। তাই তারা শান দিতে নিয়ে আসেন। এবার সবকিছুরই দাম একটু বাড়তি। গরু জবাইয়ের ছোরা বিক্রি হয় পিস হিসেবে। প্রতি পিস ছোরা বিক্রি হয় ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। গাড়ির স্প্রিংয়ের লোহার তৈরি চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়। এছাড়া বঁটি ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত এছাড়াও চাইনিজ চাপাতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায়।

রামগঞ্জসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের বেশ কয়েকটি কামারের দোকানে কথা বলে জানা গেছে, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লার অপ্রতুলতায় দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। কয়লার সংকটের কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। বিভিন্ন হোটেল থেকে প্রতি বস্তা কয়লা ৫০০ টাকায় ক্রয় করে আনতে হয়। কাজের অবস্থা খুবই খারাপ। আগে প্রতিদিন ১শ’টির মতে কাস্তে তৈরি করতাম, এখন ১০টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। কামারের কাজ করে এখন সংসার চালানো বড় কঠিন, বাচ্চাদের পড়াশোনা খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।