নওগাঁয় আউশ ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের জেলা নওগাঁয় আউশ ধান চাষাবাদ শুরু করেছেন চাষিরা। বোরো ধানের ভালো ফলন পাওয়ায় সেই আশা থেকে আউশ ধান চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে অনাবৃষ্টিতে বেড়েছে দুশ্চিন্তা। পানি না থাকায় এখনো অনেক জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। আবার যেসব জমি রোপণ করা হয়েছে পানির অভাবে সেগুলো ফেটে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তারা। অনাবৃষ্টিতে আউশ চাষ ব্যহত হচ্ছে বলে জানিয়ে কৃষি কর্মকর্তা। এ অবস্থায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়া নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে। নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ৬৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে আউশের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিমাণ জমি থেকে ৩ লাখ ৯ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। যা থেকে চাল হবে ২ লাখ ৬ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন। ২৯ হাজার বিঘা জমিতে ভর্তুকি প্রণোদনা হিসেবে বীজ ৫ কেজি এবং ডিএপি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে। চলতি বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় উত্তরের জেলা নওগাঁয় ইরি-বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পানি সংকটে পড়েছেন চাষিরা। জমিতে পানিতে সেচ দিতে না পারায় অনেক জমি এখনো অনাবাদি পড়ে রয়েছে। আবার যেসব জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে পানির অভাবে ফেটে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এ অবস্থা নওগাঁ সদর উপজেলার ইকড়তাড়া, এনায়েতপুর ও বোয়ালিয়া মাঠের। এ অবস্থায় আকাশের দিকে চেয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন চাষিরা। কৃষকরা জানান- বৃষ্টির অভাবে এখনো অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। আবার যেসব জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে পানির অভাবে ফেটে যাচ্ছে। এবছর শ্রমিক খরচ, জ্বালানি তেল, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। এতে করে পানি সেচসহ জমি রোপণ করতে বিঘাপ্রতি খরচ পড়েছে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এ বছর চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে উঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ পড়বে প্রায় ১২ হাজার টাকা। যা বিগত বছরের তুলনায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি। তবে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া ধান ঘরে তুলতে পারবেন এমন প্রত্যাশা চাষিদের। সদর উপজেলার ইকরতাড়া গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। পুকুর ও ডোবার পানি দিয়ে কষ্ট করে জমিতে আউশ ধান রোপণ করা হয়েছে। ৩-৪ দিন পর পর পানি দিতে হয়। এখন ডোবাতেও পানি নেই। এ অবস্থায় জমি ফেটে যাচ্ছে। পানি সেচ, হালচাষ, চারা রোপণ ও সারসহ জমি রোপণ করে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খচর হয়েছে। এ বছর চারা রোপণ থেকে ঘরে উঠানো পর্যন্ত আউশের আবাদে প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হবে। আকাশে মেঘ করছে- ২-৩ মিনিট ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়ে থেমে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়া খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর মে ও জুন মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়া কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে কৃষক নিজস্ব সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের চেষ্টা করছেন। আশা করা যায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।