কমলা-মাল্টার চারা তৈরি করে স্বাবলম্বী তেঁতুলিয়ার আতাউর

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

কৃষিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন পদ্ধতি। এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে উন্নতজাতের বিদেশি গাছের চারা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার আতাউর রহমান খান। কয়েক বছর আগেও যিনি ছিলেন বেকার। এখন ভিনদেশি উন্নতমানের চারা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন তিনি। আতাউর রহমান খানের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। তার ৫০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘অজি সাইট্রাস বিডি’ নামের নার্সারি। এসে নার্সারিতে রুট-সায়ন করে তৈরি করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি কমলা-মাল্টার চারা। ইম্পেরিয়াল ম্যান্ডারিন অস্ট্রেলিয়ান কমলা, পাকিস্তানি ও দার্জিলিং কমলা, মাল্টা বারি ওয়ান গাছের চারা তৈরি করেছেন তিনি। এসব চারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি।

এসব ফলের চারার পাশাপাশি তার নার্সারিতে লাগিয়েছেন ইগ অফ সান (সূর্য ডিম) আলফ্রানসেস, চিয়াংমাই, ব্রোনাই কিং, কিং অফ চাকাপাত, থ্রিটেস্ট, আমেরিকান কেন্ট, ন্যাম ডকমাই গ্রিন, ন্যাম ডকমাই ইয়েলোর মতো ৪০ প্রজাতির আমের গাছ। এসব গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। লাগিয়েছেন বিদেশি বিভিন্ন মশলা জাতীয় গাছ ও আঙুর ফলের গাছ। মহামারি করোনাকালে প্লাস্টিক বোতলে পেঁয়াজ-রসুন চাষ করেও অবাক করেছিলেন তিনি। চারা তৈরি করে নিজের ২৫ শতক চা বাগানে মাল্টা চাষ করছেন। রুট স্টক ও সায়নের মাধ্যমে জাম্বুরা গাছকে কমলা গাছে পরিণত করেছেন তিনি। এসব গাছে ধরেছে প্রচুর মাল্টা। একেকটি গাছে একশ’র মতো মাল্টা ধরেছে।

এসব মাল্টা বিক্রি করে চা বাগান থেকে বাড়তি আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন আতাউর রহমান। এ মৌসুমে ১০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করে অবাক করেছেন লাল ঢ্যাঁড়স ফলিয়ে। মাল্টার আবাদ দেখতে গিয়ে নজরে পড়ে লাল ঢ্যাঁড়সের ক্ষেত। ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, গাছগুলোতে লাল টুকটুকে ঢ্যাঁড়স। লাল ঢ্যাঁড়স বাজারে বিক্রি করে বেশ দামও পেয়েছেন তিনি। তার এ লাল ঢ্যাঁড়সের আবাদ দেখে উৎসাহিত হয়েছেন এলাকার অনেক কৃষক। জানা যায়, কৃষক আতাউর রহমান খাঁন এইচএসসি পড়ার পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি। কোনো কাজ না পেয়ে ঝুঁকে পড়েন কৃষি আবাদে। কীভাবে নিজস্ব চিন্তায় বিদেশি ফলের চারা তৈরি করা যায় তা নিয়ে ভাবতেন সারাক্ষণ। স্কুলপড়ুয়া ছেলে ফয়সালকে নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি-কর্ম। কয়েক বছরে কৃষিতে দেখেছেন সাফল্যের মুখ। এসব গাছের চারা ফেইসবুকের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে বেশ অর্থ আয় করছেন।