ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় বাঁশ শিল্পের দুর্দিন

বগুড়ায় বাঁশ শিল্পের দুর্দিন

বাঁশ শিল্প বাঙালি সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। বাঁশ দিয়ে ঘরের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করা হতো। আর এসব জিনিসপত্রের কদরও ছিল ভালো। অপ্রতুলতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে বাঁশ শিল্প। বর্তমান বাজারে প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে এককালের ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প। অন্যদিকে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অভাব-অনটনের মধ্যে দিনযাপন করছেন বাঁশ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে তারা এ পেশাকে ছেড়ে অন্য পেশায় ঢুকে পড়ছেন। ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মটি দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একসময় ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বগুড়ার গ্রামীণ পল্লিতে বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, চালুনি, মাছ রাখার খালই, ঝুঁড়ি ও হাঁস-মুরগির খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা হতো। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে সামিল হতো। আর হাটবারে স্থানীয় বাজারে এমনকি বাড়ি বাড়ি ফেরি করে এসব বাঁশ-বেতের পণ্য বিক্রি হতো।

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পের মূল উপকরণ বাঁশের মূল্য বৃদ্ধিতে বাঁশ-বেতের কারিগররা তাদের পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে গ্রামীণ কারিগররা। অনেকেই আবার এ পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। তাদের পূর্ব পুরুষের এ পেশা আঁকড়ে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ও হিমশিম খাচ্ছেন। বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘরে ঘরে ছিল বাঁশের তৈরি সামগ্রীর কদর। কালের পরিবর্তের সাথে সাথে বিশেষ আর চোখে পড়েনা। অপ্রতুল ব্যবহার আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বাঁশ শিল্প আজ হুমকির মুখে। যে বাঁশ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যেত সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। সেই পরিমাণ বাড়েনি এসব পণ্যের দাম। জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঘরবাড়ি নির্মাণে যে পরিমাণ বাঁশের প্রয়োজন, সে পরিমাণ বাঁশের ঝাড় বৃদ্ধি হচ্ছে না। বগুড়ার বিভিন্ন হাটে বাঁশ শিল্প বিক্রেতা দুলাল বসাক, গোপাল চন্দ্র, আব্দুল মজিদ, নায়েব আলী, বাবু মিয়া ও আব্দুল জলিল এর সাথে কথা হলে তারা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। অতি কষ্টে বাঁশ শিল্প টিকে রাখতে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি লাভ দিয়ে টাকা নিয়ে কোনো রকম বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে

জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। সরকারিভাবে অল্প লাভে যদি ঋণ দেওয়া হয়, তাহলে বাঁশ শিল্পের কারিগররা স্বাবলম্বী হবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত