নওগাঁয় জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার

কমেছে উর্বরতা বাড়ছে খরচ

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

নওগাঁয় একই জমি থেকে একাধিক ফসল উৎপাদন হওয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি কমছে। উর্বরতা বাড়াতে কৃষকরা জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার (ইউরিয়া, ডিএপি ও পটাশ) ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে একদিকে ফসল উৎপাদন খরচ বাড়লেও অপরদিকে মাটির গুণাগুণ হ্রাস পাচ্ছে। তবে খরচ কমাতে ও মাটির উর্বরতা বাড়াতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। শষ্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের সীমান্তবর্তী বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল ধান, সবজি ও আম। চাষিরা একই জমি থেকে বছরে একাধিক ফসল উৎপাদন করে থাকে। একই জমি থেকে একাধিক ফসল উৎপাদন করায় জমি কখনো ফাঁকা রাখা হচ্ছে না। এতে জমির উর্বরতা শক্তি কমছে। উর্বরতা বাড়াতে চাষিরা জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার (বিশেষ করে ইউরিয়া, ডিএপি ও পটাশ) ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এতে একদিকে ফসল উৎপাদন খরচ বাড়লেও অপরদিকে মাটির গুনাগুন হ্রাস পাচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর (১৯ লাখ ৭০ হাজার ১৪১ বিঘা)। যদি মাটি পরীক্ষা করা হয় তাহলে কৃষকদের বছরে খরচ বাঁচবে (বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে) ২৯৫ কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। সেই সঙ্গে রাসায়নিক সারের ওপর চাপ কমবে। এখন জৈব সারের ব্যবহার কমে জেনে বা না জেনে কৃষকরা রাসায়নিক সারের দিকে ঝুঁকছে। না জেনেই ভালো ফসল পাওয়ার আশায় অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করছে। আবার জমিতে কি পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে তা তাদের অজানা। বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক গোলাম ফারুক বলেন- একই জমিতে পর্যায়ক্রমে বোরো, পাট ও আমন এরপর সরিষা বা আলুর আবাদ করা হয়। জমি ফাঁকা থাকছে না। জমিতে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে জৈবসার খুবই কম পরিমাণ ব্যবহার করা হয়। রাসায়নিক সারে মাটি নোনা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার ফসলে পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। তবে জৈব সার ব্যবহার করা হলে মাটি ভালো থাকে এবং ফসলও ভালো হয়। গবাদিপশু কমে যাওয়ায় এখন আর জৈব সার তেমন পাওয়া যায় না।

মহাদেবপুর উপজেলার খোর্দ্দ নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন- জমিতে ১৫ কেজি ইউরিয়া সার দিয়ে আবাদ করা হতো। এখন ২৫ কেজি দিতে হয়। এর গুণগত মান কমে গেছে। জমিতে পরিমাণের বেশি দিতে হচ্ছে। জমিতে তিনবার ইউরিয়া সার দিতে হয়। এতে টাকাও বেশি খরচ হচ্ছে। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ অফিসার একেএম মনজুরে-মাওলা বলেন- কৃষকদের গো-সম্পদের পরিমাণ কমে যাওয়ায় কমেছে জৈব পদার্থের পরিমাণ। ফসলের নিবিড়তা বিশেষ করে একটি ফসল উৎপাদনের পর আরেকটি ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। এ সময়ের মাঝে জমি রেস্টিং প্রিয়ড (আরাম) পাচ্ছে না।