ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সীমানা সমস্যায় হবিগঞ্জের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা

সীমানা সমস্যায় হবিগঞ্জের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা

সীমানা চিহ্নিতকরণসহ নানা সমস্যায় আছেন হবিগঞ্জের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা। কখনো আবার বাইরে থেকে গিয়ে অনেকেই সেখানে প্রভাব খাটিয়ে অপকর্ম চালানোর চেষ্টা করেন। এছাড়া বৃষ্টি এলেই ঘরে পানি পড়ে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে জেলাকে গৃহহীন মুক্ত করার অংশ হিসেবে গৃহহীনদের জন্য জেলায় তিন ধাপে ২ হাজার ৮৩টি ঘর সরকারিভাবে নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৭৮৭টি, দ্বিতীয় ধাপে ৩৫৫টি এবং তৃতীয় ধাপে জেলায় ৯৪১টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়নের আনন্দপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১৩৫টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঘরগুলোর রং নীল। পরবর্তীতে লাল রঙের আরো ১৮টি ঘর নির্মাণ করে দ্বিতীয় পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঘরগুলো সরকারি ভূমিতে নির্মিত হলেও আশ্রয়ণের মূল ভূমি চিহ্নিত করা হয়নি। ফলে পাশের জমির মালিকরাও আশ্রয়ণ এলাকায় সরকারি জমি দখল করছেন। অনেক সময় বহিরাগতরাও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের নানাভাবে হয়রানি করেন। রাতে নানা অপকর্ম করার চেষ্টা চালান। কখনো আবার আশ্রয়ণের বন্ধ ঘরগুলোতে বহিরাগতরা রাতে মাদক সেবনসহ নানা অপকর্মের চেষ্টা করেন। এতে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

আনন্দপুরে আশ্রয়ণের বাসিন্দা জাহেদা খাতুন বলেন, আমাদের সীমানা চিহ্নিত করা হয়নি। আমরা হাঁস, মুরগি পুষতে পারি না। একজনেরটা অন্যজনের জায়গায় গেলে নানা কথা বলে। বৃষ্টি এলে আমরা ঘরে ঘুমাতে পরি না। পানি ঢুকে যায়। বিছানা ভিজে যায়। ঘরে পানি উঠে যায়। দরজা, জানালা ভেঙে যাচ্ছে। আমরা অনেক আগে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অনেক ঘরের বাথরুমের দরজা নেই। একজনের টয়লেটের ট্যাংক অন্যজনের জায়গায় চলে গেছে। এ নিয়ে অনেক সময়ই ঝগড়া হয়। আশ্রয়ণের বাসিন্দা নাছিমা খাতুন বলেন, বৃষ্টি এলেই ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। ঘরের বিছানা ভিজে যায়। টয়লেট ভরে যায়। ময়লা পানি ঘরে প্রবেশ করে। আনন্দপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক যতীন্দ্র পাল বলেন, আমাদের একটি সীমানা নির্ধারণ করা দরকার। আশপাশে অনেক ব্যক্তি মালিকানার জমি আছে। এখন আমরা আমাদের সীমানা পাচ্ছি না। কতটুকু জায়গায় আমরা বসবাস করব তা নির্ধারণ করার দাবি জানাই। তিনি বলেন, আজ দুই বছর হয়ে গেছে আমরা এখানে আছি। কিন্তু এখনো জায়গা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি এলে অনেকেরই ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। অনেকের আবার টয়লেটের ট্যাংক ডুবে ঘরে ময়লা পানি চলে আসে। প্রকল্পের সমিতির সভাপতি হিরা মিয়া বলেন, একজনের ঘরে অন্যজন থাকে। অনেকে বলে ভাইয়ের ঘরে বোন থাকছে। কিন্তু আমরা তো আসলে জানি না কে কার ঘরে থাকছে। এসব ঘরে প্রতিনিয়তই ঝগড়া হয়। বিচার করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত