ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় লবণের দাম বৃদ্ধি

লোকসানে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা

* গত কয়েক বছর ধরে চামড়া ব্যবসায় ধস নেমেছে। * সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দামে চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে না।
লোকসানে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা

ঈদ-পরবর্তী সময়ে উত্তরের জেলা নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল চামড়া আড়তে চামড়া বেচাকেনা জমে উঠেছে। ছাগল-ভেড়ার চামড়া প্রকারভেদে ৩০-৫০ টাকা এবং গরু-মহিষের চামড়া প্রতিপিস ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। তবে লবণের দাম বেশি এবং চামড়ার দাম কম হওয়ায় লোকসান গুনছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। চামড়া শিল্পকে রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। জেলার বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল চামড়া আড়ত। যেখানে সপ্তাহে প্রতি বুধ হাটবার। ভোরের আলো ফোটার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে এ আড়ত। জেলায় দুটি চামড়ার আড়ত রয়েছে। একটি মান্দার উপজেলার ফেরিঘাট এবং অপরটি বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল। চাকরাইলের আড়তে জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলা ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা এবং ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনাবেচার জন্য আসেন। ঈদ-পরবর্তী সময়ে উত্তরের জেলার এ চামড়ার আড়তে চামড়া বেচাকেনা জমে উঠতে শুরু করেছে। তবে ঢাকার ব্যবসায়ীরা না আসায় কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি তারা। এ আড়তে ছাগল-ভেড়ার চামড়া প্রকারভেদে ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং গরু-মহিষের চামড়া প্রতিপিস ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে চামড়া ব্যবসায় ধস নেমেছে।

গত বছর প্রতি বস্তা লবণ ৮০০ টাকায় কিনলেও এবার ১ হাজার ৫০ টাকায় কিনতে হয়েছে। এছাড়া বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি। কাঁচা চামড়া লবণজাত করে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি না হওয়ায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। উপজেলার ভরট্ট গ্রামের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী সুদেব বলেন, এবছর প্রতিপিস খাসির চামড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা হিসেবে ১৫০ পিস কিনেছি। নিজের পারিশ্রমিক ছাড়াই প্রতি পিসে খরচ পড়েছে ২০ টাকা করে। হাটে নিয়ে বিক্রি করতে আসার পর ব্যবসায়ীরা দাম হাঁকছেন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। জেলার পত্নীতলা উপজেলার শীবপুর গ্রামের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী সাঈদ রানা বলেন, চামড়া কিনে ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি।

সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দামে চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে না। ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা দামে চামড়া কিনেছি। প্রতিপিসে খরচ পড়েছে ১৫০ টাকা করে। ব্যবসায়ীরা যে দাম হাঁকছে এতে প্রতি পিসে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা লোকসান হবে। চামড়া শিল্পকে রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। জয়পুরহাট জেলা থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ী সুজাউল ইসলাম বলেন, সরকার যে নির্ধারিত দাম বেঁধে দিয়েছে সে দামে আমরা চামড়া বিক্রি করতে পারছি না। এ হাটে চামড়ার দাম কম। আমাদেরও কম দামে বিক্রি করতে হবে। গত ২০০৪ সাল থেকে ট্যানারি মালিকদের কাছে ৮ লাখ টাকা পাওনা আছি। এ বছর এক টাকাও পাইনি।

জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সহসভাপতি ও চাকরাইল চামড়া আড়তের আহ্বায়ক আলহাজ আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় দুটি চামড়ার আড়ত রয়েছে। তার মধ্যে একটি চাকরাইল আড়ত। ঈদ-পরবর্তী এ আড়তে গরুর চামড়ার সরবরাহ কম হলেও ছাগলের চামড়ার সরবরাহ হয়েছে বেশি। ঢাকার ব্যবসায়ীরা না আসায় চামড়ার দাম তুলনামুলক কম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত