কারাগার রক্ষীদের অত্যাচারে কয়েদির আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পারভেজ উজ্জ্বল, নীলফামারী

মেলে না কি টাকা দিলে সবকিছুই পাওয়া যায় নীলফামারী জেলা কারাগারে, বললেন সৈয়দপুর উপজেলা থেকে আসা দর্শনার্থী রুবেল ইসলাম। তার মতে ১৫ দিন পরপর দর্শনার্থীদের সঙ্গে কয়েদিদের সাক্ষাতের সময় থাকলেও টাকা দিলে প্রতিদিন দেখা করা সম্ভব। এরকম অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে নীলফামারী জেলা কারাগারের রোজনামচা।

এরমধ্যে গতকাল কয়েদির আত্মহত্যার চেষ্টা প্রমাণ করে দেয় সবকিছু। কারাগার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় কয়েদি দুলাল হোসেনের শারীরিক নির্যাতনের ফলে তীব্র ব্যথা দেখা দেয়, কারাগার কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সুস্থ না হলে তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। এ বিষয়ে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল আল হাজ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, আমি রংপুরের বাড়িতে অবস্থান করছি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরজমিন নীলফামারী হাসপাতালের এমারজেন্সি অফিসার ডা. মো. জুলফিকার আলী নবাব আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, তীব্র কোমরের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নীলফামারী সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের মিলের পাড় এলাকার মাছ ব্যবসায়ী এনামুল ওরফে এস্তামুলের পুত্র সাজাপ্রাপ্ত আসামি দুলাল হোসেন (৩২)। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরও সুস্থ না হওয়ায়, আমরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি এবং কারারক্ষীরা তাকে দ্রুত নিয়ে যায় কিছুক্ষণ পরেই রাত সাড়ে ১১টায় রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে চিকিৎসাধীন কয়েদি দুলাল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি রক্ষীদের সামনে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করেন। এ বিষয়ে মুঠোফোনে নীলফামারী কারাগারের জেলার আবুল নুর মোহাম্মদ রেজা বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং নামাজের কথা বলে লাইন কেটে দেন। এদিকে নীলফামারী জেলা কারাগার নিয়ে নানা অভিযোগ দিনের পর দিন উঠলেও কোনো রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি কর্তৃপক্ষ। কয়েক বছর পূর্বে কারারক্ষীর হাতে শতাধিক বোতল ফেনসিডিল আটক হয় কিন্তু আজ অবধি ওই মামলার কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। মাদকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, টাকার বিনিময়ে গাঁজার সিগারেট থেকে শুরু করে সবকিছুই পাওয়া যায় এই কারাগারে। এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, এসব বিষয়ে অনেক কিছু শুনেছি এবং কারাগারে যা কিছু অনিয়ম হচ্ছে তার দেখার দায়িত্ব হলো কারা কর্তৃপক্ষের, তবে জেলায় কারাগারের যে কমিটি রয়েছে সেখানে বিষয়টি উপস্থাপন করব।