ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নাটোরে ৬৮ এতিমের বিয়ে দিল রুবেল

নাটোরে ৬৮ এতিমের বিয়ে দিল রুবেল

কারো বাবা নেই, কারো নেই মা। কেউ আবার মা-বাবাকে হারিয়ে নানা-নানির বা দাদা-দাদির সংসারে লালিত হয়েছেন। আবার অনেক বাবা গরিব বলে মেয়ের বিয়ের বয়স হলে অর্থ সংকটে বিয়ে দিতে পারছেন না। এমন ৬৮ জন এতিম, অসহায় ও গরিব মেয়েদের নিজ খরচে বিয়ে সম্পন্ন করেছেন ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল। গত শুক্রবার দুপুরে বগুড়া সদর উপজেলার বিদুপাড়া গ্রামে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাফুজার রহমানের মেয়ে মোছা. মাকছুদা খাতুনের (২২) বিয়ের মধ্য দিয়ে ৬৮তম বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বর বগুড়া সদর উপজেলার বিদুপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রিজু হোসেন (২৬)। এবং স্থানীয় একটি বাজারে ব্যবসা করেন। ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। বিয়ে বাড়িতে জমকালো আলোকসজ্জা, তোরণ, কনে ও বরের মঞ্চ, কনে সাজানোর জন্য বিউটিশিয়ান, ভিডিও ধারণ কোনো কিছুরই যেন কমতি ছিল না এ বিয়েতে। বরযাত্রীসহ প্রায় ৩০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বিয়েতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহফুজার রহমান একজন কৃষক। দিনমজুরি করে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছিলেন। টাকার অভাবে ঘরে উপযুক্ত মেয়ের বিয়ে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। সপ্তাহ খানেক পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে স্থানীয়রা বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেলের সন্ধান দিলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কৃষক মাহফুজার। কৃষকের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনে বিয়ে দিন-তারিখ ঠিক করতে বলেন রুবেল। পরে গত শুক্রবার সকাল থেকে চলছিল আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রান্নার আয়োজন। একটি কক্ষে কনেকে সাজানোর কাজে ব্যস্ত একজন বিউটিশিয়ান। এরইমধ্যে বরের জন্য প্রস্তুত মঞ্চ। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পড়ল বরযাত্রীরা। বরকে উন্নতমানের উপহারের মাধ্যমে বরণ করেন ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল। কনে মাকছুদা খাতুন বলেন, আমার বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছেন। মকতব পর্যন্ত পড়াশোনাও করিয়েছেন। বাবার আর্থিক সমস্যায় আমার বিয়ে দেয়া সম্ভব ছিল না। বাবার পরিশ্রমে কোনোমতে সংসার চলত আমাদের। একজন মানবিক মানুষ এগিয়ে এসেছেন আমাদের পাশে। আমার বিয়ের সব অর্থ দিয়েছেন তিনি। কখনো ভাবতে পারিনি, এত সুন্দরভাবে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমার বিয়ে সম্পন্ন হবে। আমি এবং আমার পরিবার রুবেল ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কৃষক মাহফুজার রহমান বলেন, কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি মেয়ের এত বড় আয়োজনে বিয়ে হবে। আমার মাথায় বড় একটা বোঝা ছিল। আজ তা হালকা হলো। রুহুল আমীন রুবেলের প্রতি আমি চির-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহপাক তাকে দীর্ঘায়ু দান করেন। রুহুল আমীন রুবেল বলেন, মহান আল্লাহর রহমতে এ পর্যন্ত নিজ খরচে অসহায়, এতিম ও গরিব ৬৮টি মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করেছি। গত শুক্রবার শেষ হয়েছে আমার ৬৮তম মেয়ের বিয়ে। আনুমানিক দুই সপ্তাহ পূর্বে ৬৭তম মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত