ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাঁদপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

চাঁদপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

চাঁদপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতার সূত্র থেকে জানা গেছে, গত ৭ দিনে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩২ জন গুরুত্বর অবস্থায় ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬ জনকে ঢাকা রেফার করা হয়েছে। এরা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে ও চতুর্থ তলায় মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ হাসপাতালে আলাদা ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই ইউনিটগুলোতে মশারি টানিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। গত ৩ মাসে ১১২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চলতি মাসের ২ জুলাই থেকে ৮ জুলাই বিকাল পর্যন্ত ৭ দিনে ৩২ জন নারী-পুরুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে ২৩ জন ও মহিলা ওযার্ডে ৯ জন রোগী ভর্তির পর গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে গেল এপ্রিল মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত গত তিন মাসে হাসপাতালে ১১০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর। গত শনিবার দুপুর পর্যন্ত বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩২ জন। এদের মধ্যে কয়েকজন ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের গুরুত্ব সহকারে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাক্তারদের নিয়ে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এদিকে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায় রোধে অভিযান চালিয়েছেন জেলা প্রশাসন। অভিযানকালে ৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আর এমও মাহমুদুন্নবী মাসুম জানান, চাঁদপুরেও আস্তে আস্তে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এরই মধ্যে আমরা ছয়জনকে ঢাকা রেফার করেছি। এখনো ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডে আলাদাভাবে আমরা ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি এবং বিশেষভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, এবিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড এবং মহিলা ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট স্থাপন করেছি এবং সেখানে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টানিয়ে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু রোগী সম্পর্কে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্ষা মৌসুমে সাধারণ মশা ও এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যার ফলে ডেঙ্গু জ্বর ও চিকুনগুনিয়া রোগ ছড়ায়।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে এবং এ ভাইরাসবাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে হয়ে থাকে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয়দিনের (৩ থেকে ১৩ ক্ষেত্রে) মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বাসা বাড়ির ফুলের টবে পানি জমিয়ে না রাখা, ড্রেন পরিষ্কার রাখা এবং বাসি বাড়িও পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্তদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরুষ ওয়ার্ডে ৮টি বেডের আলাদা ইউনিট করে রেখেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত