হাসপাতাল নিজেই ‘রুগ্ন’ শুধু নাই আর নাই

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে রোগীরা এসে আরো নানান অসুবিধায় ভুগছেন। বিশেষ করে নারী-পুরুষ ও শিশুদের ওয়ার্ডে অধিকাংশ বৈদ্যতিক ফ্যান দীর্ঘদিন ধরে বিকল থাকায় বর্তমানে ভর্তি রোগীদের অবস্থা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। রোগীরা আরো রোগী হয়ে পড়ছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী রোগীদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থানীয়দের কাছে হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত। তবে যেই নামেই পরিচিত হোক না কেন, এখানে সুইপার থেকে শুরু করে বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দেওয়ার জন্য অপ্রতুল। হাসপাতালে ১০ জন বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও সেখানে রয়েছে দুইজন। রোগীদের জন্য রাধুনীর পদটি দীর্ঘ ২ বছর ধরে খালি থাকলেও ভাড়া করা রাধুনী দিয়ে কোনো মতে চলছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান বলে কিছু নেই। ফলে রোগীরা বাইরে থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন। প্রয়োজনীয় পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ নেই বললেই চলে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথানাশক ও শিশুদের ওষুধ হাসপাতালটিতে নেই বললেই চলে। চরাঞ্চলসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না। একটি মাত্র অপারেশন থিয়েটার। সেটিও বিগত ১০ বছর ধরে তালা ঝুলে আছে। এমনকি হাসপাতালটিতে সরকারি কোনো মোবাইল নম্বর নেই। আবার দুটি ওয়ার্ডে ২১টি ফ্যানের মধ্যে মাত্র দুটি ফ্যান চালু রয়েছে। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ফ্যান নেই বললেই চলে। যাতে করে ভর্তি হওয়া রোগীদের ফ্যানের অভাবে মহিলা ও শিশুরা গরমে হাসফাঁস করছেন। সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রাম থেকে আসা রোগী ওসমান সরকার (৭০) বলেন, আমি ১৫ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। কিন্তু চিকিৎসাসেবা বলে কিছু নেই এখানে। বাড়িতে অসুবিধা থাকায় বৃদ্ধ বয়সে কষ্টে মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে বাধ্য হয়েছি। একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৬০) বলেন, কি করব, উপায় তো নেই আমার। কষ্ট হলেও ভর্তি থাকতে হচ্ছে আমাকে। এ ব্যাপারে সদর ইউনিয়নের ৭ ওয়ার্ড সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, আমি কয়েকদিন আগে হাসপাতালে গিয়াছিলাম আমার গ্রামের রোগী দেখতে। দেখি হাসপাতালে ফ্যানের অভাবে রোগীরা মুখ দিয়ে হা-করে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন। রোগীদের ত্রাহী মধুসুদন অবস্থা দেখা দিয়েছে এ গরমে। রাতের বেলা ১টি ওয়ার্ডে ১টি বাল্ব কোনায় জ্বললেও অন্য রোগীরা মোবাইলের আলো দিয়ে খাওয়ার কাজ সারছেন। হাসপাতাল অব্যবস্থাপনার অবস্থা বর্তমানে অবর্ণনীয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. মো. মাহবুবুর রহমান সর্দার বলেন, হাসপাতালের সমস্যা আছে ঠিকই, আমারও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। আমি ইচ্ছে করলেই সমস্যা রাতারাতি সমস্যা সমাধান করে দিতে পারি না। সমস্যাগুলোর জন্য আমি ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি, খুব শিগগরই সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।