ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জলাশয় ভরাটের মহোৎসব

একযুগে পুকুর কমেছে ১৪ হাজার ৮১৩টি

একযুগে পুকুর কমেছে ১৪ হাজার ৮১৩টি

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের তোয়াক্কা না করে যশোর জেলায় একের পর পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় পুকুর ভরাট করে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। এতে জেলার জলাধার ও সবুজায়ন কমে যাচ্ছে। তবে সচেতন মহলের অভিযোগ, এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। গত ১২ বছরে জেলায় পুকুর কমেছে ১৪ হাজার ৮১৩টি। এতে মৎস্যসম্পদের ক্ষতি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন জেলার সচেতন মানুষ। ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জানাচ্ছে, জেলায় পুকুর ছিল ৫৩ হাজার ৯৪২টি। তবে জাতীয় তথ্য বাতায়নে যশোর জেলায় বর্তমান ৩৯ হাজার ১২৯টি পুকুরের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে যশোর পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, পৌরসভা, জেলা প্রশাসকের ও বেসরকারি মিলে মোট ৩২০ জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে যশোর পৌরসভার ৬টি, জেলা প্রশাসকের ৪০টি এবং বেসরকারি ২৭৪টি পুকুর রয়েছে। তবে যশোর পৌরসভায় কী পরিমাণের সবুজায়ন আছে; সেই তথ্য দিতে পারেনি সংস্থাটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে পুকুর ভরাট হয়েছে, পোস্ট অফিসের সামনের পুকুর, নিরালা সিনেমা হলের পাশের পুকুর, বেজপাড়ার শ্রীধর পুকুর, আরবপুরের বড় জলাশয়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সড়কে ইসমাইল ডাক্তারের পাশের পুকুর, ইসলামী স্কুলের পুকুর, পুরাতন কসবা আবু তালেবের পুকুর, ডা. মোজাম্মেলের পুকুর, মন্টুদের পুকুর, নিরিবিলি পুকুর, রাজুদের পুকুর, মুন্সী বাড়ি পুকুর, আয়নাল খাঁর পুকুর, জব্বার বিহারির পুকুর, গোহাটা পুকুর, ষষ্ঠিতলাপাড়ায় ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনের পুকুর ও খালধার সড়কের পুকুর। সচেতন নাগরিক ও পরিবেশবাদীদের দাবি, জলাশয় ভরাটের কারণে যশোর শহরের পরিবেশ বিপর্যয় শুরু হয়েছে। প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে যশোর শহরে পানির জন্য হাহাকার পড়ে। ভূগর্ভস্থ পানির ভান্ডার বাড়ায় যত দিন যাচ্ছে এই পানির স্তর নিচে যাচ্ছে। শুকনো মৌসুমে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। স্তর অধিক নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি ওঠে না। ফলে চলতি বছরে পৌর এলাকার পানির স্তর ৪৫ ফুট পর্যন্ত নেমে যায়। যশোর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) বিএম কামাল আহমেদ বলেন, এবারে শুষ্ক মৌসুমে পৌর এলাকার পানির স্তর ৪৫ ফুট পর্যন্ত নেমে যায়। এজন্য পৌর এলাকার অধিকাংশ হ্যান্ড টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে। বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য তারা পাম্প ও ডিপ টিউবওয়েল ছিল ভরসা। তিনি আরও বলেন, জলাশয় বা পুকুর রক্ষায় কাজ করছে যশোর পৌরসভা। পুকুর বা জলাশয় ভড়াটের খবর জানতে পারলেই অভিযান চালাচ্ছি। বাংলাদেশ পরিবেশবাদী আন্দোলন (বাপা) সভাপতি আজিজুল হক মনি বলেন, যেখানে ২৫ শতাংশ সবুজয়ন থাকতে হবে। সেখানে যশোরে মাত্র ৭ শতাংশ সবুজায়ন রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত