ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চৌদ্দগ্রামে নৃশংসভাবে মা-ছেলেকে হত্যা

চৌদ্দগ্রামে নৃশংসভাবে মা-ছেলেকে হত্যা

মাত্র আড়াই বছর বয়সি জিহাদুল ইসলাম জিহাদ। গত ৪ জুলাই রাতে নৃশংসভাবে চাচাতো ভাই আবদুল্লাহ আল শাহেদ কর্তৃক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হারিয়েছেন মা আয়েশা আক্তার নিপা ও ভাই আলী আহসান মুজাহিদকে। ঘটনার রাতে জিহাদ বাড়ির জেঠী ও স্বজনদের কাছে ছিল। গত বুধবার সকাল থেকেই বাড়িতে লোকজন ভীড় করায় শিশু জিহাদ তার মা ও ভাইয়ের জন্য কান্নাকাটি করতে থাকে। খবর পেয়ে নানা-নানিসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা বাড়িতে এসে কান্নাকাটি শুরু করলে শিশু জিহাদ হতবম্ব হয়ে পড়ে। এরই মাঝে তার গর্ভধারিনী মা ও ভাইয়ের লাশ থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে জানাযা শেষে মা ও ছেলে দুইজনকে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচরা বেপারী বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়। বর্তমানে শিশু জিহাদ নানা-নানির বাড়ি জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘড়িয়ায় অবস্থান করছে। হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে পরদিন বিকেলেই দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন শিশু জিহাদের বাবা আনোয়ার হোসেন। বাবা, নানা, নানি অন্যান্য স্বজনরা শিশু জিহাদকে দেখাশুনা করলেও কিছুক্ষণ পর পরই সে মা ও ভাইয়ের কথাই বলছে। মোবাইল ফোনে মা ও ভাইয়ের ছবি দেখে মা, মা বলে ডাকতে থাকে। স্বজনরা মা ও ভাই আসবে-এমন কথা বলে শ্বান্তনা দিচ্ছে। নানার বাড়িতে অপরিচিত কাউকে দেখলেই সে আঁতকে উঠে ঘরে ডুকে যায়। গতকাল দুপুরে সরেজমিন জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘড়িয়া গ্রামে শিশু জিহাদের নানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শিশু জিহাদ খেলাধুলা করছে। বাড়িতে অন্যান্য শিশুর সাথে তেমন মিশছে না। অপরিচিত লোক দেখলেই ঘরে ডুকে যায়। নানি নাজমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ে নিপা ও নাতি মুজাহিদকে হারালাম। আড়াই বছর বয়সী নাতি জিহাদ ঘটনার পর থেকে আমার কাছে আছে। তাকে কি বলে শান্তনা দেব-সেই ভাষা আমার জানা নাই। সারাদিন শুধু মা মা আর ভাই ভাই বলে ডাকাডাকি করে। রাতের বেলায় ঘুমের সময় বিছানায়ও মা ও ভাই খুঁজতে থাকে। মোবাইলে ছবি দেখিয়ে তাকে ঘুমানো হয়’। নানা জালাল আহমেদ বলেন, রাতের বেলায় জিহাদের কান্নার শব্দ শুনে আর ঘুম আসে না। সারারাত নাতিকে তার মা ও ভাই আসবে বলে শান্তনা দিতে হয়’। শিশু জিহাদের ছোট নানা ইলিয়াহ আহমেদ বলেন, ‘জিহাদ এখন কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে?। সে সারাদিন কান্নাকাটি করে কাপড় পড়িয়ে দেয়ার জন্য বলে-আম্মুর কাছে যাবো, ভাইয়ের কাছে যাবো। তাকে কিভাবে শান্তনা দিবো? আমি এ হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। শিশু জিহাদের বাবা দুবাই প্রবাসী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার স্ত্রী আয়েশা আক্তার নিপা ও ছেলে আলী আহসান মুজাহিদ হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই’।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত