তেলিয়াপাড়া চা বাগান স্মৃতিসৌধ এখন পিকনিক স্পট

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হীরেশ ভট্টাচার্য্য হিরো, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্মৃতি বিজড়িত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকা আকর্ষণীয় পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐতিহাসিক চা বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকায় দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক মুক্তিযোদ্ধ চত্বর এলাকা ও তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে ৪ কিলোমিটার অভ্যন্তরে এ স্থানটির অবস্থান। সুরমা চা বাগানের ভেতর দিয়ে তেলিয়াপাড়া চা বাগান ম্যানেজার বাংলো সংলগ্ন পূর্ব পাশে স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন সময়ের এক অনন্য স্মৃতি ধারণ করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এই স্মৃতিসৌধ। বর্তমান সরকারের আমলে স্মৃতিসৌধ ও আশপাশের এলাকা সংস্কার করায় স্মৃতিসৌধটি নতুন রূপ ধারণ করেছে। স্মৃতিসৌধের কাছেই নয়নাবিরাম লেক। সবুজ শাপলা ও বাগানের অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য সহজেই দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। গত ৫ বছর ধরে এ স্থানে দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা এ স্থানে পিকনিক করার জন্য প্রতিনিয়ত আসছেন। রাইফেলের বুলেট আকৃতির স্মৃতিসৌধের সোনালি রং রোদের উজ্জ্বল আলোতে ঝলমল করে। স্মৃতিসৌধের প্রবেশপথের দুই পাশে কবি শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতার পংক্তিমালা লেখা রয়েছে। বেদির পূর্ব পাশে লাগানো ফলকে লেখা রয়েছে- ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে স্মৃতিসৌধ’ উদ্বোধন করেন মেজর জেনারেল এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম সেনাপ্রধান ৩নং সেক্টর কমান্ডার সন ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ। দক্ষিণ দিকে লাগানো ফলকে লেখা রয়েছে- শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন, মুক্তিবাহিনীর আনুষ্ঠানিক প্রথম সদর দপ্তর, তেলিয়াপাড়া বাঁশবাড়ি, মাধবপুর। এছাড়া ফলকের নামের তালিকা রয়েছে রাজনৈতিক নেতা সাবেক সেনা ও সরকারি কর্মকর্তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাম। এর মধ্যে রয়েছে- প্রথম সেনাপ্রধান কর্নেল আতাউল গণি ওসমানীসহ সেনাপ্রধান লে. কর্নেল আব্দুর রব এমএসএ, মেজর কেএম সফিউল্লাহ (সিলেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া), মেজর খালেদ মোশাররফ (কুমিল্লা নোয়াখালী), মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর (কুষ্টিয়া যশোহর পশ্চিম রণাঙ্গন) নাম। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর কেএম শফিউল্লাহ তেলিয়াপাড়া চা বাগানে তার হেড কোয়ার্টার স্থাপন করেন। ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সড়ক ও রেলপথে বৃহত্তর সিলেটে প্রবেশের ক্ষেত্রে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এখান থেকেই ১১টি সেক্টর বণ্টন করা হয়। এ স্থান থেকে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা ছাড়াও চা বাগানে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে উঠে।