ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভরা মৌসুমে মাছশূন্য নদী

জেলেদের হাহাকার
ভরা মৌসুমে মাছশূন্য নদী

কুড়িগ্রামে সব নদ-নদী এখন পানিতে টইটুম্বুর। খাল, বিল, জলাশয় ভরে গেছে বৃষ্টির পানিতে। বর্ষার এ মৌসুমে জেলেদের মাছ নিয়ে বেশি আশা থাকলেও এ বছর সেই আশার গুড়ে বালি পড়েছে। তারা নদীতে নামলেও আশানুরূপ মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। এতে সংকটে পড়েছে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা পরিবারগুলো। অনেকে ঋণ করে নৌকা, জাল কিনলেও নদীতে মাছ না পাওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা মাছ বিক্রি করে দু’বেলা ভাতও জুটছে না বলে জানিয়েছেন জেলেরা। সরেজমিন দেখা যায়, কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে মাছ ধরতে এসেছেন জেলে রহিম সাধু, ময়নাল, তারা মিয়া ও গণেশচন্দ্রের দল। তারা চারজনে মিলে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে কিনেছেন জাল, নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম। গত এক সপ্তাহ থেকে তারা সারা রাত নদীতে পড়ে থাকলেও মাছ পাচ্ছেন না। যেসব মাছ পাচ্ছেন তা নিতান্ত হতাশাজনক। ভরা নদীতে বড় মাছের পরিবর্তে পাচ্ছেন ছোট ছোট পুঁটি, মলা ও ইছা মাছ। সারা রাত জেগেও কষ্টের দাম পাচ্ছেন না তারা। তারা জানান, দলবেঁধে মাছ ধরতে গিয়ে জুটছে তিন থেকে চার কেজি মাছ। এ মাছ বিক্রি করে ভাগে পাচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা মাত্র। অথচ এই মৌসুমে পাওয়ার কথা ১-২ মণ মাছ। কথা হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মাঝিপাড়া গ্রামের সুশান্ত রায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা বছর নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। গত কয়েক বছর ধরে নদীতে তেমন মাছ পাচ্ছি না। আমরা আশায় থাকি নতুন পানি এলে নদীতে মাছ বেশি পাব। তিন মাস মাছ বিক্রি করে সারা বছরের খোরাক মিটাব। কিন্তু এ বছর যা দেখছি তা খুবই হতাশাজনক। ঋণ করে নৌকা বানিয়েছি, নতুন জাল কিনেছি। গত কয়েক মাস ধরে নদীতে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু মাছ পাই না। মোগলবাসা ধরলা নদীর পাড় এলাকার অনন্ত কুমার বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছিটকি জাল নিয়ে নদীতে দাঁড়িয়ে আছি। নদীতে পানি থাকলেও মাছ নেই। এখন পর্যন্ত নিজেদের খাওয়ার মাছই জুটল না। কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদ-নদীতে পানি থাকায় বড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাই। তবে ছোট মাছ আশানুরূপ থাকে না। এবার চিত্রটা ভিন্ন। কেননা মাছের বংশ বৃদ্ধির সময় পোনা মাছগুলো ধরার কারণে মাছের এই সংকট। এছাড়া নদীর নাব্য না থাকায় মাছের বংশ বৃদ্ধিতে অনেকটা প্রভাব পড়ে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত