গফরগাঁওয়ে দুই চাষির স্বপ্নপূরণ

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

বাগানের ছোট-বড় গাছে ঝুলছে মালটা। কোনো গাছে ৩০-৪০টি কোনো গাছে ৫০টিও ধরেছে। এমনি অবস্থা দেলোয়ার হোসেন শেখ ও মো. মনির দপ্তরির মালটা বাগানের। চাষি দেলোয়ার সাড়ে তিন একর জমিতে মালটা চারা রোপণ করেন। সেটি ২০১৯ সালের কথা। এখন দেলোয়ারের বাগানে রয়েছে ১৪ শতাধিক মালটার গাছ। আর কৃষক মনির গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৩০০টি বারিজাত-১ মালটার চারা সংগ্রহ করে ১ একর সমতল জমিতে রোপণ করেন। এখন দেলোয়ার ও মনিরের বাগানের প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলে আছে মালটা। বাতাস উঠলেই তালে তালে দোল খাচ্ছে মালটাগুলো। দেলোয়ারের সাড়ে তিন একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা এই মালটা বাগান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের ডুবাইল গ্রামে অবস্থিত। আর জয়ধরখালী গ্রামের মনির দপ্তরির মালটা বাগানটি ওই গ্রামেই অবস্থিত। তিনি মালটা চাষ শুরু করেন ২০২০। তাদের বাগানে ঢুকতেই মালটার শোভা দেখে মন ভরে যায়। মালটা চাষ করে এখন সফল দেলোয়ার ও মনির। তাদের উদ্যোগ ও সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষিত তরুণ ও যুবকরা মালটা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষি পেশাকে দেলোয়ার-মনির মনেপ্রাণে ভালোবাসেন। মনির প্রথমে লেবু বাগান করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। সেই নেশা পিছু ছাড়েনি তার। তাই লেবু বাগানের পাশাপাশি মালটা বাগান করার ইচ্ছে ছিল তার। পরে কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে তিন শতাধিক চারা পেয়ে গড়ে তোলেন মালটা বাগান। সেটি ২০২০ সালের কথা। এখন তার বাগানের সব গাছেই ধরেছে মালটা। অপর অগ্রবর্তী কৃষক দেলোয়ার ২০১৯ বিশাল মালটা বাগান গড়ে তোলেন। এখন তার বাগানজুড়ে ১৪শ সারি সারি মালটা গাছ। প্রায় সব গাছেই ঝুলছে মালটা। একেকটি গাছে ৩৫ থেকে ৩০টি পর্যন্ত মালটা ধরে আছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. ফারুক আহমদ বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে ২০১৯ সাল থেকে মালটা, কমলা, বাতাবি লেবু এবং লেবু- এ চারটি ফসলের আবদ সম্প্রসারণ শুরু হয়েছে। মালটা এবং কমলা আমদানি করতে গিয়ে আমরা যে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করি সেগুলোর সাশ্রয় ঘটানোই হলো এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩০টি জেলাধীন ১২৩টি উপজেলায় কৃষকদের বিনামূল্যে মালটা, কমলা ও বাতাবি লেবুর কলম চারা দেয়ার পাশাপাশি তাদের চারা রোপণের জন্য দক্ষভাবে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। তাছাড়া তাদের জৈব ও রাসায়নিক সার বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। গফরগাঁও উপজেলার ডুবাইল গ্রামের দেলোয়ার একজন অগ্রবর্তী কৃষক। তিনি নিজ উদ্যোগে সাড়ে তিন একর জমিতে মালটা আবাদ করেছেন। তার বাগানের সার্বিক অবস্থা ভালো। আশা করছি এ বাগান থেকে তিনি অনেক মালটা বিক্রি করতে পারবেন এবং আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দেশের ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণ করে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করব। আমাদের কৃষক ভাইদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। সর্বোপরি সমৃদ্ধ হবে আমাদের কৃষি।