ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

১২ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

১২ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে হাজারও মানুষ। নবাবগঞ্জ উপদেষ্টার জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রাজাপুর নয়াপাড়া খালপাড়ের দৃশ্য এটি। দুই যুগের বেশি সময় ধরে একটি পাকা সেতুর অভাবে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসী জানান, শুকনো মৌসুমে তারা বাঁশ দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো তৈরি করেন। সেই সাঁকো দিয়ে জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ১২ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কেউ কথা রাখছে না। জনপ্রতিনিধিরাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছেন। সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। বর্ষায় কিংবা পানি বেড়ে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমে যায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা। কয়েকটি গ্রামের হাজারের ওপর শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে দাবি অভিভাবক ও শিক্ষকদের। অন্যদিকে আরেক সমস্যার সৃষ্টি হয় যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পরে। রোগীকে চিকিৎসার জন্য ভালো জায়গায় নেওয়াও সম্ভব হয় না, যার কারণে জীবন ঝুঁকিও বেশি এই কয়েকটি গ্রামের মানুষের বলে দাবি স্থানীয়দের। নয়াডাঙ্গী এলাকার মবজেল খান বলেন, ‘যারা এই এলাকায় থাকেন তারাই শুধু এখানকার মানুষের কষ্ট বোঝেন। অনেকে আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু সেতু আর হয়নি।’ রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাউছার হোসেন বলেন, ‘বর্ষা আসলেই ডুবে যায় সাঁকোটি। এই সময়ে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যায়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে আমাদের শিক্ষার্থীরাও অনেক উপকৃত হবে।’ কলেজ শিক্ষার্থী ইশিতা খান বলেন, ‘আমাদের সারা বছরই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা এলে নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না। সাঁকোটি ভেঙে এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলেই আমাদের দুর্ভোগ শেষ হবে।’ এলাকাবাসী জানান, বর্ষার শুরুতে চলাচলের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি ডুবে যায়। কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায় খালের পাড়। প্রায় সময় সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। কিছুদিন আগেও সম্পূর্ণ ভাঙা ছিল সাঁকোটি। এলাকার যুবকরা মিলে সংস্কার করায় কিছুটা চলাচলের উপযোগী হয়েছে। প্রতি বছরই দুই পাড়ের স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। চাঁদা তুলে কেনেন বাঁশ খুঁটি। জনপ্রতিনিধিরা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও পরে তা আর বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ তাদের। তাই অবিলম্বে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেশমা আক্তার বলেন, ‘যেহেতু সামনে নির্বাচন উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। তা না হলে জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাব কীভাবে। উপজেলা থেকে তো একটা ফান্ড থাকতে হবে। আমরা যখন যেভাবে দিকনির্দেশনা পাই সেভাবেই কাজ করি।’ এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডির) নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, ‘সাঁকোটির ব্যাপারে আমার জানা নেই। আপনার কাছেই শুনলাম। কোনো জনপ্রতিনিধি এ নিয়ে কখনো কিছু বলে নাই।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত