ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নদীভাঙনের ঝুঁকিতে আবাদি জমি

সরিয়ে নেয়া হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
নদীভাঙনের ঝুঁকিতে আবাদি জমি

সারা বছর আগ্রাসী পদ্মায় ভাঙন আতঙ্ক থাকলেও সম্প্রতি ভাঙন তীব্র হয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি, সরকারি স্থাপনাসহ পদ্মা পাড়বাসীদের ঘরবাড়ি। এছাড়া ভাঙনের কবল থেকে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি কলেজ নিরাপদ দুরত্বে সরাতে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা বলেছেন, উজানের ঢল আর আষাঢ়ের বর্ষণে বাড়ছে পদ্মার পানি। ফলে দিন দিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে পদ্মা। দীর্ঘ এক দশকে সরকারি হিসেবে ভিটামাটি হারিয়েছে প্রায় হাজার খানেক পদ্মা পাড়ের শ্রমজীবী মানুষ। সামান্য সরকারি সহায়তা আর ঘুরে দাঁড়ানো প্রবল ইচ্ছায় পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা নতুন করে স্বপ্ন দেখলেও, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বছরে নদীভাঙনের কবলে পানিতে মিশে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত সেইসব স্বপ্ন। সম্প্রতি সময়ে তীব্র হয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা ঈদগাহ থেকে সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ রশিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার পদ্মাপাড়ের মানুষ নদীভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন। এরই মধ্যে চরপাঁকার তেররশিয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা নদীভাঙনের কবলে ভিটামাটি হারিয়ে বিশ রশিয়ার নামোচর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয়রা বলেছেন, নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে সদর উপজেলার নারায়নপুর আদর্শ মহা বিদ্যালয় ও নারানপুর দারুল হুদা আলিম মাদ্রাসা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে মহাবিদ্যালয়টি সরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ চলছে পুরোদমে। কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে মাদ্রাসার ভবন ভাঙার কাজ। এছাড়া সদর উপজেলার নারানপুর ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, দুই তলাবিশিষ্ট আশ্রয়ণ কেন্দ্র, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর এমএ উচ্চবিদ্যালয়, নারায়ণপুরের বাতাস মোড় বাজার, কয়েক হাজার কৃষকের আবাদি জমিসহ প্রায় ৫ হাজার পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি। ইউসুফ আলী নামে এক পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা জানান, পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে এবং কমলে নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে উজানের ঢল আর বর্ষার কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতি বছরই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, কিন্তু স্থায়ী পদক্ষেপ নেয় হয় না। তিনি বলেন, পদ্মা পাড়ের হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এখানকার বাসিন্দাদের দাবি পদ্মা নদীতে ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। অস্থায়ী জিও ব্যাগ-জিও টিউব ব্যবহার করে নদী ভাঙনরোধ করার চেষ্টা করেন। এতে কোনো কাজই হয় না। নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদীভাঙনের ঝুঁকিতে কলেজটি ধুলাউড়ি এলাকা থেকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। দরপত্রের আহ্বান করে কলেজটির ভবনসহ কিছু সরঞ্জামাদি বিক্রির কার্যক্রম করা হয়েছে। বর্তমান স্থান থেকে নারায়ণপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়টি প্রায় ৫০০ মিটার দূরের এলাকা বাগপাড়ায় কলেজটি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কর্মকর্তা স্বপন আলী বলেন, চলতি বছরের মধ্যে শিবগঞ্জের দক্ষিণ পাঁকা থেকে ধুলাউড়ি ঘাটের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীভাঙন হয়েছে। এতে কৃষকের আবাদি জমি, মানুষের ভিটামাটি সবই নদীতে বিলিন হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত