ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুরাদনগর ভূমি ব্যবস্থাপনায় এসিল্যান্ড নাজমুল হুদার লড়াই

মুরাদনগর ভূমি ব্যবস্থাপনায় এসিল্যান্ড নাজমুল হুদার লড়াই

একজন সরকারি কর্মকর্তা চাইলেই একটা এলাকার চেহারা পাল্টে দিতে পারেন, অসহায় মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেন- তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নাজমুল হুদা। তিনি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) হিসাবে কর্মরত আছেন। ৩৭তম বিসিএসের এ নবীন কর্মকর্তার হাত ধরেই যেন বদলে যাচ্ছে মুরাদনগর উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ভূমি অফিসগুলো। সাধারণ মানুষের কাছে ভূমি অফিসগুলো হচ্ছে বরাবরই দুর্নীতির আখড়া। কিন্তু মুরাদনগর যেন সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) যেন মানুষের চোখের জল মুছে দিয়েছেন তার যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, সাহস আর কর্মের প্রতি একাগ্রতার মধ্য দিয়ে। গত অর্থবছরে ই-নামজারি ৮ হাজার ৫৩৯টি হলেও এই অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০২টি নামজারি নিষ্পত্তি করে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। মুরাদনগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসাবে নাজমুল হুদা গত বছরের জুন মাসে যোগদানের পর থেকে বদলে গেছে এখানকার ভূমি অফিসের চিত্র। সাধারণ মানুষকে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা করে দিয়েছেন তিনি। ২২ ইউনিয়ন ও দুটি থানা নিয়ে গঠিত মুরাদনগর উপজেলা। এখানকার প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে যাওয়া সেবাগ্রহীতারা আগে হয়রানির শিকার হয়েছেন। কিছু কিছু ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করাতে পারেননি। অনেক সময় টাকা নিয়েও সংশ্লিষ্টরা কাজ করেছেন উল্টো। এরই পরিপেক্ষিতে নাজমুল হুদা যোগদানের পরপরই দীর্ঘদিন থেকে একই কর্মস্থলে থাকা প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বদলি করিয়েছেন। নাজমুল হুদা মুরাদনগরে যোগদানের পর থেকে ১১ মাসে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ছুটে গিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বোনদের সম্পত্তি ভাইয়েরা লিখে নিয়ে যাচ্ছেন। কিংবা অনেক ভাই বোনের সম্মতি ছাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ওয়ারিশ গোপন করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সম্পত্তি কেনাবেচা করছেন। বছরের পর বছর এভাবে বোনদের ওয়ারিশ বঞ্চিত করে এলেও নাজমুল হুদা যেন সেখানে দেবদূত হয়ে হাজির হয়েছেন বঞ্চিতদের পাশে। মুরাদনগরের প্রতিটি গ্রামে এলাকাবাসী কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করে বছরের পর বছর নাল শ্রেণি দেখিয়ে খাজনা দিয়ে আসছিল। কিন্তু নতুন সহকারী কমিশনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরেজমিন তদন্ত করে শ্রেণি পরিবর্তন হওয়া জমিগুলো বাড়ি ও ভিটি দেখিয়ে শ্রেণি পরিবর্তন করে খাজনা আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত