অনাবৃষ্টিতে ক্ষতি

নওগাঁয় পাটের ফলন কম

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে পাটের আবাদ। জমিতে বীজ রোপণ করা হলেও ঠিকমতো চারা না গজানোয় ফলনের পরিমাণ কম হয়েছে। এ বছর অনাবৃষ্টিতে আবাদ ভালো না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে চাষিরা। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। এদিকে ডোবায় পানি না থাকায় পাট জাগ (পচন ধরা) দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ফলনে কম হলেও দাম ভালো পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন চাষিরা। পরিশ্রমের তুলনায় গত কয়েক বছর থেকে পাটের দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারিয়েছিল চাষিরা। তবে গত দুই বছর থেকে আবারো চাষিরা পাটের দাম পাওয়া শুরু করেছে। পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে প্রণোদনাসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে- চলতি বছরে জেলায় ৫ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৫২০ হেক্টর। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় ৫ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ হাজার ৭২৫ হেক্টর, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ হাজার ৯৩৩ হেক্টর এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ হাজর ১৫০ হেক্টর পাটের আবাদ হয়েছিল। গত ৫ বছরের ব্যবধানে পাটের আবাদ কমেছে প্রায় ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর। জেলায় এ বছর প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৫ মণ পাট উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৩ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। পলিথিন ব্যবহারের পরিবর্তে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়ানো গেলে পরিবেশ যেমন রক্ষা পারে তেমনি পাটের হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চকগোপাল গ্রামের চাষি শাহজাহান আলী বলেন- বৃষ্টি নাই বললেই চলে। উজানের ঢলে নদীতে পানি আছে। কিন্তু খালে বা ডোবায় পানি নাই। ডোবায় পানিতে পাট জাগ দেওয়া হলে ১২-১৫ দিনের মধ্যে ধোয়া যায়। আর নদীর পানিতে জাগ দিলে ভেসে চলে যাওয়ার ভয় থাকে। আবার ২৫-৩০ দিনের মতো সময় লাগে। পাট জাগ দেওয়ার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা থাকলে সুবিধা হয়। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন- পাট চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে ২ হাজার জন কৃষকের প্রত্যেককে ১ কেজি করে বীজ প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালিন শাকসবজিসহ অন্যান্য আবাদ বেশি হওয়ার কারণে পাটের আবাদ কিছুটা কমেছে। পাটের আবাদের জন্য বেশি বৃষ্টির দরকার হয় না। তবে এ বছর বৃষ্টি কম হলেও পাটের উৎপাদন ব্যাহত হবে না বলে মনে করছেন তিনি।