জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  পটুয়াখালী প্রতিনিধি

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলছে জেলেদের জালে। সমুদ্রযাত্রায় প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ পেয়ে খুব খুশি জেলে, ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীরা। গতকাল পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য বন্দরে দেখা গেছে, ইলিশ মাছে ভরে গেছে মৎস্য অবতরণ এলাকা। বঙ্গোপসাগর থেকে একের পর এক মাছ বোঝাই ফিশিং ট্রলারগুলো এসে ভিড়ছে। শ্রমিকরা এসব ট্রলার থেকে মাছ আড়তে ওঠাচ্ছেন। সেই সঙ্গে উন্মুক্ত দরদামে পাইকারদের কাছে মাছ বিক্রি করছেন। অবরোধ শেষে প্রথম দিনে তাই বাজারদরও ভালো।

ট্রলারের মাঝি লিয়াকত বলেন, এতদিন অবরোধ শেষে সমুদ্রে গিয়ে তেমন ভালো মাছ পাইনি, দীর্ঘদিন বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধার নিয়ে পরিবারসহ কোনোরকমে চলছি। তবে বাজারে মাছের ভালো চাহিদা রয়েছে। ট্রলারের মাঝি সাদেক বলেন, বাংলাদেশে অবরোধ চলে আর ভারতীয়রা মাছ ধরে নিয়ে যায়, এই হলো বাংলাদেশের অবরোধ। মাছ পেয়েছি প্রচুর, দামও ভালো। ধারদেনা করে চলছি, মাছ ধরে এনে বিক্রি করে মহাজনের টাকা পরিশোধ করতে হবে। আমাদের মধ্যে কিছু জেলে আছে যারা অবরোধের মধ্যেও অসাধু উপায়ে মাছ শিকার করেছেন।

মেসার্স একতা ফিসের মালিক এনায়েত মিয়া বলেন, গভীর সমুদ্রে গতকাল রাত থেকে বিভিন্ন মাছের ট্রলার গেছে। যেসব ট্রলার মাছ পেয়েছে, তারা মাছ নিয়ে ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন অবরোধ শেষে আশা করা যায় এবছর ভালো মাছ পাওয়া যাবে। সরবরাহ বেড়ে গেলে মাছের দাম কমে যাবে। মহিপুর বন্দর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনসার মোল্লা বলেন, সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা জেলেরা পালন করেছে। তারা গতকাল রাত থেকেই মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারের মাধ্যমে দেশের মৎস্য চাহিদা পূরণ করে আসছেন জেলেরা। অথচ জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে ঝড় কিংবা জ্বলোচ্ছ্বাসে সমুদ্রে ডুবে মারা গেলে পরিবারকে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। তাই তিনি নিবন্ধিত জেলেদের জন্য ঝুঁকিভাতা চালুর জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, টানা ৬৫ দিনের অবরোধে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সুন্দরভাবে অতিবাহিত হয়েছে। জেলেরা এই জন্য সমুদ্রে মাছ পাচ্ছেন। এবার অবরোধের সময় অভিযানে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

সমুদ্রে প্রায় ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। জেলেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মাছ শিকার করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সমুদ্রে বেশি বেশি মাছ শিকার করায় তাদের আয় বৃদ্ধি পাবে, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।