ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নকলায় কাসাবা চাষে আশার আলো

নকলায় কাসাবা চাষে আশার আলো

শেরপুরের নকলা উপজেলায় অনুর্বর পতিত জমিতে কন্দল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাসাবা (স্থানীয় নাম শিমুল আলু) চাষের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে কাসাবা হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় কন্দাল ফসল। কাসাবাতে চাষে কৃষকের আশা পূরণ হবে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তাসহ অনেকে। কাসাবা গাছের ধরন দেখে ও বাজারে ভালো দাম থাকায় উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের কবুতরমারী ব্লকের বানেশ্বরদী খন্দকারপাড়া গ্রামের কাসাবা চাষি মোস্তাফিজুর রহমানের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। নকলায় এ কন্দাল ফসল কাসাবা চাষের অপার সম্ভাবনার কথা বলছে কৃষি বিভাগ। নাম মাত্র শ্রমে ও ব্যয়ে বাড়তি আয়ের মাধ্যম হতে পারে এই কাসাবা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য এবং উৎপাদনের দিক থেকে গম, ধান, ভুট্টা, গোল আলু ও বার্লির পরই কাসাবার স্থান। কাসাবা গাছের পাতা দেখতে অনেকটাই শিমুল গাছের পাতার মতো। এ গাছ ৪ ফুট থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। চারা রোপণের ৬ মাস পরে মাটির নিচে গাছের গুড়ালি থেকে চারপাশ দিয়ে আলু (টিউবার) ধরে। আলুগুলো দেখতে অনেকটাই মিষ্টি আলুর মতো, তবে মিষ্টি আলুর চেয়ে বেশ বড় হয়। যা লম্বায় এক ফুট থেকে দুই ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার অনুর্বর জমিতে বেশ আগে থেকেই বিচ্ছিন্নভাবে কাসাবার চাষাবাদ করা হচ্ছে। তবে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে নকলায় এই প্রথম পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিকভাবে কাসাবা চাষ শুরু করা হয়। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে হেক্টর প্রতি ২০ টন থেকে ২৫ টন কাসাবা উৎপাদন করা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ শাহীন রানা জানান, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত দুই জাতের কাসাবার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড থেকে এসেছে। একটি অনেকটা লাল রঙের, অন্যটি সাদাটে। তবে নকলায় এবছর যে কাসাবা চাষ করা হয়েছে তা স্থানীয় উন্নত জাত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী জানান, অন্য ফসলের চেয়ে কাসাবা চাষে খরচ কম; কিন্তু লাভ বেশি পাওয়া যায়। এতে প্রয়োজনীয় কিছু সেচ দেওয়া ছাড়া তেমন কোনো সার ও কীটনাশক লাগে না। এ ফসল চাষে বাড়তি কোনো পরিচর্যার দরকার হয় না। তিনি বলেন, কাসাবা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত কর্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ কন্দল জাতীয় ফসল।

পরিষ্কার কাসাবা খাদ্য হিসেবে কাঁচা বা সিদ্ধ করে খাওয়া যায়। কাসাবা থেকে উন্নতমানের সাদা আটা পাওয়া যায়; যা দিয়ে রুটি, বিস্কুট, চিপসসহ নানাবিধ খাবার তৈরি সম্ভব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত