ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মই বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে

মই বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার হাজিরহাট এলাকায় নবনির্মিত সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি সেতু এলাকাবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। চলতি মাসের বন্যায় সংযোগ সড়কের দুইপাশের মাটি সরে গিয়ে সেতু দুটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। ফলে বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা সেতুতে উঠছেন কাঠের মই দিয়ে। এভাবে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় তাদের দীর্ঘদিনের ‘স্বপ্নের সেতু’ কোনো কাজে আসছে না। দুটি সেতুর উভয় পাশেই সংযোগ সড়ক নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বৈরাতী গ্রামের হাজিরহাট এলাকার একটি খালে সেতু দুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর-দক্ষিণের সেতুটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির নির্মাণকাজ পায় নেত্রকোনার এটিএল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজ পেয়ে ওই ঠিকাদার স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে তা দিয়ে দেন। অপরদিকে, ওই খালের পূর্ব-পশ্চিম দিকের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরকে অর্থায়ন করে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা)। এর ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে এটির কাজ পায় আদিতমারীর মো. ইব্রাহিম নামে একজন ঠিকাদার। সেটিও স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে দিয়ে দেন তিনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ‘ত্রাণের ব্রিজ’ হিসেবে পরিচিত সেতুর পূর্বপাশে করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। সেখানে সামান্য যা মাটি ছিল তা বন্যায় ভেসে গিয়ে খাদে পরিণত হয়েছে। ফলে স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ-কাঠ দিয়ে মই আকৃতির সিঁড়ি বানিয়ে অনেক কষ্ট করে সেই সেতুতে উঠছেন। তবে সেখান দিয়ে কোনো যানবাহন পারাপারের সুযোগ নেই। ওই এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, নতুন ব্রিজ পাইলেও উঠতে হয় কষ্ট কইরা। কষ্ট যদি পাই তাইলে টাকা খরচ কইরা কী লাভ হলো।

এখন চিন্তায় আছি, বড় বন্যা আসলেই ব্রিজের কারণে আমাদের বাড়িঘর ভাইঙ্গা যাইবো। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অর্থায়নে নির্মিত ব্রিজটির সংযোগ সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটি ভরাটের কাজ চলছে। শিগগির রাস্তা নির্মাণ করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা হবে। লালমনিরহাট বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী মোনায়েম হোসেন বলেন, বিএডিসির অধীনে যে সেতু নির্মাণ হয়েছে তার সংযোগ সড়ক করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি বন্যায় তা ভেঙে গেছে। ঠিকাদারের জামানতের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। ঠিকাদার আবারও সড়ক নির্মাণ করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত