ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেত্রকোণায় সাত শহীদ স্মরণ দিবস আজ

নেত্রকোণায় সাত শহীদ স্মরণ দিবস আজ

আজ ২৬ জুলাই, নেত্রকোণার সাত শহীদ স্মরণ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর নামক স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে লড়াই করে শহীদ হন সাত মুক্তিযোদ্ধা। তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- নেত্রকোণার আব্দুল আজিজ, মো. ফজলুল হক, জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মো. নূরুজ্জামান, দ্বীজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, মো. ইয়ার মাহমুদ ও ভবতোষ চন্দ্র দাস। এছাড়া কালা মিয়া নামে এক কিশোরও এই যুদ্ধে শহীদ হন। তাদের মরদেহ ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী এলাকায় গণেশ্বরী নদীর পাড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১১৭২ নম্বর পিলারের কাছে সমাহিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কলমাকান্দা উপজেলা ইউনিট কমান্ডসূত জানায়, পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুরের বিরিশিতে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর বৃহৎ ক্যাম্প। খবর আসে যে, ২৬ জুলাই সকাল ৮টায় বিরিশিরি ক্যাম্প থেকে রসদ নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল নদীপথে নাজিরপুর হয়ে কলমাকান্দা যাবে। তাদের নাজিরপুরের কাছেই আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাজমুল হক তারার নেতৃত্বে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় নাজিরপুর পৌছে যায়। তারা তিনটি পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে নাজিরপুর বাজারের সবকটি প্রবেশপথ আগলে অ্যাম্বুস পাতে। ২৬ জুলাই সকাল ৯টার পরও পাকিস্তানি সেনাদের দেখা না পাওয়া যাওয়ায় অ্যাম্বুস প্রত্যাহার করে ক্যাম্পে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণ জানান কমান্ডার। মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে হেঁটে নাজিরপুর বাজারের কাছে পৌঁছালে হঠাৎ করেই পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের শিকার হন।

অপ্রস্তুত থাকলেও পাল্টা জবাব দেন মুক্তিযোদ্ধারা। খুবই কাছাকাছি অবস্থানে থেকে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধা-পাকিস্তানি বাহিনীর সামনা-সামনি যুদ্ধ, গুলি আর পাল্টা গুলি। দিনভর চলা যুদ্ধে শহীদ হন সাত বীর মুক্তিযোদ্ধা। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তারার কণ্ঠনালী ছিঁড়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে একসময় পিছু হঠে পাকিস্তানি সেনাদল। তাদের মধ্যেও অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। সাত শহীদ স্মরণ দিবসকে ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবসও বলা হয়ে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা-উপজেলা ইউনটের পক্ষ হতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, আলোচনা সভা এবং বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত