ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাঁশতলার পানতোয়া শত বছরেও স্বাদ অটুট

বাঁশতলার পানতোয়া শত বছরেও স্বাদ অটুট

সিরাজগঞ্জে শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি পানতোয়া। কারিগররা এখনো এর মান ধরে রেখেছেন। দুধের ছানা ঘিয়ে ভেজে রসে ডুবিয়ে বানানো হয় এই মিষ্টি। চিনি ও পানির পাতলা রসে ভিজিয়ে তৈরি বলে নাম হয়েছে পানতোয়া।

জেলার চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর পশ্চিম তীরের এনায়েতপুর গ্রামের বাঁশতলা বাজারে পাওয়া যায় এই মিষ্টি। জিভে জল আনা পানতোয়াকে অবশ্য স্থানীয় লোকজন বলে ‘বাঁশতলার পানি তাওয়া’। উৎসব-পার্বণে এখানকার মানুষের ঘরে পানতোয়া থাকবেই। পানতোয়ার সুনাম ছড়িয়েছে দেশের অন্যান্য এলাকার মিষ্টিপ্রিয়দের মধ্যেও। ৮০ গ্রাম ওজনের একটি পানতোয়া মিষ্টি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পানতোয়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। যমুনার ভাঙনে চৌহালী উপজেলার স্থলপাকরাশী বাজারটি বিলীন হয়ে গেলে গণেশ মোদকের দুই ছেলে ধীরেন মোদক ও লোকনাথ মোদক এনায়েতপুরের বাঁশতলা বাজারে ‘ভোলানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’ নামে একটি মিষ্টির দোকান দেন। প্রায় ৫০ বছর ধরে পানতোয়াসহ নানা পদের মিষ্টি বানান তারা। ধীরেন মোদকের ছেলে মহাদেব মোদক ও লোকনাথ মোদকের ছেলে চিত্ত মোদক অবশ্য সম্প্রতি একই নামে দুটি দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। দোকানের মালিক মহাদেব মোদক বলেন, বংশ পরম্পরায় দাদু-বাবার ব্যবসা আমরা ধরে রেখেছি। তবে ব্যবসা আগের মতো হচ্ছে না।

আমাদের দেখে অনেকেই এই পানতোয়া মিষ্টি তৈরি করছে। তাদের দোকান সদরে হওয়ায় আমাদের এখানে ক্রেতা না এসে সেখান থেকেই পানতোয়া কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এনায়েতপুর কেজির মোড় এলাকার রনি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক রঞ্জিত ঘোষ বলেন, এক সময় স্থলপাকরাশী বাজারে পানতোয়ার দোকানের সামনে নিজেদের তৈরি ঘোল বিক্রি করতেন তিনি। তখন থেকে তার আশা ছিল মিষ্টির দোকান দেওয়ার। সেই আশা থেকে তিনি ৫০ বছর ধরে নিজের দোকানে পানতোয়া, রসগোল্লা, রসমালাই তৈরি করছেন। মিষ্টির কারিগররা জানান, প্রতিদিন সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই মণ কাঁচা দুধ সংগ্রহ করে কাঠের চুলায় জ্বাল দিয়ে দুধ ঠান্ডা করা হয়। আগে রেখে দেওয়া ছানার পানির সহায়তায় ঠান্ডা হওয়া দুধের ছানা কাটা হয়। এরপর কাপড়ের মাধ্যমে দুধের পানি থেকে ছানা আলাদা করা হয়। পানি ঝরে গেলে ছানা কিছুটা ঝরঝরে হয়ে ওঠে। এরপর সেই ছানা দিয়ে বড় পটোলের মতো করে তৈরি করে ঘিয়ে ভাজা হয়। সেখান থেকে তুলে ছেড়ে দেওয়া হয় পানি ও চিনির তৈরি পাতলা শিরায়। এভাবেই তৈরি হয় নরম আর সুস্বাদু পানতোয়া।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত