ইতিহাস বিখ্যাত রাজা প্রতাপাদিত্যর রাজধানী আজ বন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। এখানে-সেখানে ভগ্নস্তূপ, ছোট ছোট কিছু নামফলক। কে বলবে এক সময় এ স্থানটি ছিল সমৃদ্ধ জনপদ। যেখানে শোনা যেত, অশ্বের হ্রেষা, সৈন্যদের ঢাল তলোয়ারের ঝনঝনানি। এখন স্থানটিতে শুধুই বাতাসের ফিসফিস আর পুরোনো দালানকোঠার আড়ালে ঘুরে-ফিরে সেসব দিনের স্মৃতি। এ স্মৃতিবহুল স্থানটির নাম ঈশ্বরীপুর। যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী। বর্তমানে এলাকাটি বংশীপুর নামে পরিচিত। সাতক্ষীরা শহর থেকে প্রায় ৫০
কিলোমিটার গেলে শ্যামনগর।
উপজেলা সদর থেকে সুন্দরবনের দিকে ৫ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই বংশীপুর বাজার। যার কিছু দূরেই সুন্দরবন। যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের স্মৃতিবিজড়িত এ এলাকার অনেক ইমারত এখন পোড়াবাড়ি। পঞ্চদশ শতকে যে জনপদ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এখন সেই এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংস্তূপে। অতিতের স্মৃতি হিসেবে এখনো এখানে রয়েছে টাঙ্গা মসজিদ, যশেশ্বরী কালীমন্দির, দুর্গ, হাম্মামখানা, বারো ওমরাহ কবর, প্রাচীরের কিছু অংশ এবং ঐতিহাসিক শাহি মসজিদ। নবাব সোলায়মানের পুত্র নবাব দাউদ শাহের স্বাধীনতার চেতনা থেকেই কালক্রমে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যশোর রাজ্যের রাজধানী। ১৫৭৩ সালে সিংহাসনে বসেন দাউদ শাহ। তার দুই বাল্যবন্ধু শ্রীহরি ‘বিক্রমাদিত্য’ এবং জানকিকে ‘বসন্ত রায়’ উপাধি দিয়ে তিনি তাদের মন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেন। বর্তমানে সুন্দরবনঘেরা এ এলাকার জলদস্যু, মগ, পর্তুগিজদের লুটতরাজ এবং অত্যাচার দমনের জন্য নবাব দাউদ শাহ বিক্রমাদিত্য ও বসন্ত রায়কে দায়িত্ব দেন।