জয়পুরহাটে বাড়ছে লাম্পি স্কিন রোগ

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে গরুর ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পি স্কিন দ্রুত বাড়ছে। অনেক গরু রোগ থেকে সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি মারা যাচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, এ জেলায় প্রতিবছর পাঁচ লাখের ওপর দেশি ও সংকর জাতের গরু লালন-পালন করা হয়। এই গরু পালনে খামারিদের ব্যাপক অঙ্কের টাকা ধরা থাকে। সম্প্রতি লাম্পি স্কিন ভাইরাস গরুর শরীরে বাসা বেঁধেছে। এতে গরু-বাছুর দুর্বল হয়ে মারাও যাচ্ছে। জানা গেছে, লাম্পি স্কিন রোগে পাঁচবিবি উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছে ২০০টির মতো গরু। সদরে ৬৫টি, আক্কেলপুরে ৬২টি, কালাইয়ে ৫০টি ও ক্ষেতলাল উপজেলায় ১৩০টি। অর্থাৎ ৫০৭টি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচবিবি উপজেলায় ২৫টি ও কালাইয়ে একটি গরু মারা গেছে। বেসরকারি তথ্য মতে, জেলায় ৩ হাজারের মতো গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আর গরু মারা যাওয়ার সংখ্যাও ৫০-এর মতো হবে। সদরের পুরানাপৈল হালট্টি গ্রামের নুরুল ইসলাম গত মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে একটি বকনা গরু নিয়ে আসেন। তার গরুটিও লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। নুরুল ইসলাম বলেন, দুটি গরু বাড়িতে আছে। এর মধ্যে ছোট একটি বকনা গরুর গলায় গোটা গোটা হয়ে ফুলে গেছে। গরুটি ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না। তাই দ্রুত চিকিৎসা দিতে এখানে এনেছি। পাঁচবিবির জামাল উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন, আমি ছোট-বড় মিলে নয়টি গরু পালন করি। এর মধ্যে তিনটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। দুটি বাছুর ও একটি বড় গরু। গরুগুলো খেতে পারছে না। শরীরে খুব জ্বর, পা ফুলে গেছে। আরো কয়েকটা গরুর জ্বর শুরু হতেই হাতপাতালে গিয়ে ওষুধ নিয়ে এসেছি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে বাছুর গরু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সেটি আবার লাল রঙের গরু। বড় গরুর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বেশি। এজন্য বড় গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাস কম হচ্ছে। জয়পুরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের জেলা ট্রেনিং অফিসার ডা. এসএম খুরসিদ আলম বলেন, প্রথমে যখন শুরু হয়, তখন গরু পালনকারীরা চিকিৎসা দেননি। ফলে বেড়ে গেছে। লাম্পি স্কিনে গরু আক্রান্তের লক্ষণ পেলেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এখন এই রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা অনেকটা কমে এসেছে। জয়পুরহাট আঞ্চলিক প্রাণী রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, লাম্পি স্কিন একটি ভাইরাস। এটি গরুর স্কিনে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ হওয়ার আগেই গরুকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। কিন্তু লাম্পি স্কিন হওয়ার পর ভ্যাকসিন দিলে তা ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগে। অনেক সময় গরুর শরীরে এটি দীর্ঘ হলে গরু মারাও যায়। এতে গরু পালনকারীদের আর্থিক ক্ষতি বেশি হয়।