ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চায়ের জমিতে কমলা-মাল্টার চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী আতাউর

চায়ের জমিতে কমলা-মাল্টার চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী আতাউর

কৃষিতে প্রতিনিতই যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন পদ্ধতি। এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে উন্নতজাতের বিদেশি গাছের চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার আতাউর রহমান খান। আতাউরের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। তার ৫০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘অজি সাইট্রাস বিডি’ নামের নার্সারি। এসে নার্সারিতে রুট-সায়ন করে তৈরি করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি কমলা-মাল্টার চারা। ইম্পেরিয়াল ম্যান্ডারিন অস্ট্রিলিয়ান কমলা, পাকিস্তানি ও দার্জিলিং কমলা, মাল্টা বারি ওয়ান গাছের চারা উৎপাদন করেছেন তিনি। এসব চারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। এসব ফলের চারার পাশাপাশি তার নার্সারিতে লাগিয়েছেন ইগ অব সান (সূর্য ডিম) আলফ্রানসেস, চিয়াংমাই, ব্রোনাই কিং, কিং অব চাকাপাত, থ্রিটেস্ট, আমেরিকান কেন্ট, ন্যাম ডকমাই গ্রিন, ন্যাম ডকমাই ইয়েলোর মতো ৪০ প্রজাতির আমের গাছ। এসব গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে। লাগিয়েছেন বিদেশি বিভিন্ন মসলা জাতীয় গাছ ও আঙুর ফলের গাছ। মহামারি করোনাকালে প্লাস্টিক বোতলে পেয়াজ-রসুন চাষ করেও অবাক করেছিলেন তিনি। চারা তৈরি করে নিজের ২৫ শতক চা বাগানে মাল্টা চাষ করছেন। রুট স্টক ও সায়নের মাধ্যমে জাম্বুরা গাছকে কমলা গাছে পরিণত করেছেন তিনি। এসব গাছে ধরেছে প্রচুর মাল্টা। একেকটি গাছে ১০০টির মতো মাল্টা ধরেছে। এসব মাল্টা বিক্রি করে চা বাগান থেকে বাড়তি আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন আতাউর রহমান।

জানা যায়, কৃষক আতাউর রহমান খাঁন এইচএসসি পড়ার পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি। কোনো কাজ না পেয়ে ঝুঁকে পড়েন কৃষি আবাদে। কীভাবে নিজস্ব চিন্তায় বিদেশি ফলের চারা তৈরি করা যায়, তা নিয়ে ভাবতেন সারাক্ষণ। স্কুলপড়ুয়া ছেলে ফয়সালকে নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি-কর্ম। কয়েক বছরে কৃষিতে দেখেছেন সাফল্যের মুখ। এসব গাছের চারা ফেসবুকের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে বেশ অর্থ আয় করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, তেঁতুলিয়ায় উপজেলায় ব্যাপক আকারে চায়ের জমিতে মাল্টা হচ্ছে। বিশেষ করে বেলে-দোআঁশ মাটিতে নানান বিদেশি ফল ও ফুল চাষ হচ্ছে। তেঁতুলিয়ার চাষিদের মধ্যে তিরনইহাট এলাকার আতাউর রহমান অন্যতম। তিনি একজন নার্সারির মালিকও। সম্প্রতি তিনি চা বাগানে মাল্টা চাষ সফলতার মুখ দেখছেন। পাশাপাশি নার্সারিতে বিভিন্ন বিদেশি ফলের গাছের চারা তৈরি করে তা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। চা শিল্প অঞ্চলে মাল্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মাল্টা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত