মানিকগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জে বলাকা জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের অবহেলায় নাসরিন আক্তার (৩২) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার স্বজনরা। নিহত নাসরিন বেগম জেলার ঘিওর উপজেলার নয়ারচর গ্রামের মো. রিপন মিয়ার স্ত্রী। সদ্য ভূমিষ্ট পুত্র সন্তান ছাড়াও ১১ ও ছয় বছর বয়সি দুইটি কন্যাসন্তান রয়েছে তার। জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরের দিকে চিকিৎসক ওসমান গণির তত্ত্বাবধানে বলাকা জেনারেল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করতে ভর্তি হন নাসরিন বেগম। ওই দিন বিকাল ৫টায় অপারেশন করেন চিকিৎসক মো. ওসমান গনি। অপারেশন করার সময় রোগীর রক্তনালী কেটে যাওয়ার পর তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় প্রসূতি নাসরিন বেগম। নিহত নাসরিন বেগমের স্বামী রিপন মিয়া জানান, ‘অপারেশনের সময় আমার স্ত্রীর রক্তনালী কেটে ফেলেছিল। অপারেশনে যে সমস্যা হয়েছে সেটা আমাদের জানায়নি। কয়েক ব্যাগ রক্ত দেয়ার পর সন্দেহ হলে আমি বারবার জিজ্ঞাসা করার পর বলেছে। পরে আমার স্ত্রীকে এনাম মেডিকেলে রেফার্ড করে। এনাম মেডিকেলের চিকিৎসকরা বলেছে, রক্তনালী কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এখন তিনটা সন্তান নিয়ে আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। আমি এই অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার বিচার চাই।’ গত বুধবার সকাল ১১টার দিকে বলাকা জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ রুমগুলো তালা দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাপাত্তা হয়ে গেছে। হাসপাতালটিতে কোনো রোগী, চিকিৎসক, নার্স বা অন্যান্য কোনো স্টাফ নেই। এরপর দুপুর ১টার দিকে নিহত নাসরিন বেগমের পিতার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বলাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের মাধ্যমে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করছে। এদিকে অভিযুক্ত চিকিৎসক ওসমান গনি ভুল চিকিৎসার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অপারেশনের আগে ডা. মোসলেম উদ্দিন আল্ট্রাসনোগ্রাম করে রিপোর্ট দিয়েছিল।

তার রিপোর্টে লেখা ছিল এক রকম, আর রোগীর বাস্তব অবস্থা ছিল অন্যরকম। যেকারণে রোগীর প্রকৃত অবস্থা জানা যায়নি। বলাকা জেনারেল হাসাপতালের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, ডাক্তারের কারণে রোগী মারা গেছে। এখানে হাসপাতালের কোনো গাফলতি নেই। রোগীর সেবা প্রদানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এই রোগীর মৃত্যুর দায় ডাক্তারকেই নিতে হবে। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, রোগীর লোকজন আমাদের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ সরকার বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।