ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে বালুর স্তূপ সরানোর নির্দেশ

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে বালুর স্তূপ সরানোর নির্দেশ

কৃষি কাজের নামে রেলের জমি নামমাত্র টাকায় লিজ নিয়ে দুই যুগ ধরে ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড়াই রমরমা বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কেপিআইভুক্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন স্থানীয় নেতারা। বিশাল বিশাল বালুর স্তূপে ঢাকা পড়েছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু। বালু পরিবহনের ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে গাইডব্যাংকের বিভিন্ন স্থান ভেঙে ফেলায় (ব্রিজ বাঁধ) হুমকির মুখে পড়েছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু। রেলের জমিতে বালু ব্যবসার সহযোগিতার অভিযোগে রয়েছে রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছেন, রেল কর্মকর্তারা বিশেষ সুবিধা পেয়ে কৃষিজমি হিসেবে নামমাত্র টাকায় লিজ দিয়ে বালুর ব্যবসার সুযোগ দিয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন মহলের চাপে বিভাগীয় রেল কর্তৃপক্ষ হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে বালুর স্তূপ সরিয়ে নিতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। কেপিআইএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু কেপিআইভুক্ত এলাকা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় দর্শনার্থী রেজিস্টার নেই, সিসি ক্যামেরা নেই, ব্রিজের উভয় পাশে কাঁটাতারের বেড়া এবং সশস্ত্র টহলের ব্যবস্থা নেই। ব্রিজের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন, ড্রেজিং, মাছ ধরা, নৌকা ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে প্রবেশ পথে এবং মূল ব্রিজের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। অথচ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন রেলের জমি কৃষি কাজের জন্য লিজ নিয়ে কিছু ব্যক্তি বাণিজ্যিকভাবে অবৈধভাবে বিশাল বিশাল বালুর স্তূপ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির সম্মুখীন। রেল কর্মকর্তারা বলেছেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে যেন আর নতুন করে বালু স্তূপ করা না হয় এবং স্তূপ বালু সরিয়ে নিতেও বলা হয়েছে। পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলাম বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার আশপাশে আগে নদী থেকে বালু তোলা হলেও এখন হয় না। অন্য এলাকা থেকে নৌকায় বালু এনে এখানে স্তূপ করে ব্যবসা করা হয়। নৌকায় বালু আনতে ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয় বলে শুনেছি। বালু ব্যবসার সঙ্গে কোনোদিনই জড়িত ছিলাম না। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও গাইড ব্যাংকের ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেল তাদের জমি ইজারা দিয়েছে। তারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা কি বলব? রেল-নৌ-পুলিশ ও প্রশাসন তো কিছুই বলে না। পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল মণ্ডল বলেন, বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গাইড ব্যাংক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিরাপত্তার স্বার্থে বালু মহাল বা বালুর স্তূপ সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বালুর স্তূপ এখান থেকে সরানোর পর ব্রিজের নিরাপত্তার স্বার্থে আশপাশের এলাকা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে বালুর স্তূপ সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বালু ব্যবসায়ীরা এখান থেকে সরিয়ে না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত