ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কিশোরগঞ্জে দেড় বছরে পানিতে ডুবে ১৫০ জনের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জে দেড় বছরে পানিতে ডুবে ১৫০ জনের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জে পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারীদের সঠিক হিসাব নেই জেলার সরকারি কোনো দপ্তরেই। স্বাস্থ্য বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে গেল দেড় বছরে কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে ৮৬ শিশুসহ আনুমানিক দেড়শ’ জন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব মৃত্যু রোধে অভিভাবকদের সচেতন করতে নেই কোনো সরকারি সঠিক উদ্যোগ। এদিকে পানিতে ডুবে শিশুসহ সব বয়েসিদের মৃত্যু রোধে সামাজিক সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি নিয়মিত পালন করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হিসাব রাখে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখায়। এ শাখায় গিয়ে দেখা যায়, গত দেড় বছরে পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী ৫৩ জনের হিসাব রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসন অফিসের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার পানিতে ডুবে মৃত্যুর হিসাবে বিস্তর গড়মিল পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ২১ জুলাই বাড়ির উঠানে খেলা করার সময় অভিভাবকদের অগোচরে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কামারকোনা গ্রামের দুই শিশু মণি (৫) ও তন্বী (৬)। চলতি বছরের প্রায় সাত মাসে এ উপজেলায় পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে ১২ শিশু। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গেল দেড় বছরে জেলায় ৮৬ শিশু পুকুর, নদী ও ডোবার পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে। কবি ও গবেষক জাহাঙ্গীর আলম জাহান বলেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে মাঠ পর্যায়ে অভিভাবকদের সচেতন করাসহ সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কেউ কাজ করে না। এমন কার্যক্রম কখনো আমাদের চোখে পাড়েনি। এতে করে, অভিভাবকরা সচেতন হতে পারছেন না। সরকারকে গুরুত্বসহকারে এগিয়ে আসতে হবে এ বিষয়ে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জুয়েল বলেন, কিশোরগঞ্জ পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা যেতে পারে। তাহলে এসব অনাকাঙ্খিত মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে অনেকাংশে। জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যুর সব হিসাব নেই আমাদের কাছে। আমরা শুধুমাত্র যেসব মরদেহ উদ্ধার করি, তার হিসাব আছে। গত দেড় বছরে আমরা ৩২টি মরদেহ কিশোরগঞ্জ জেলার সীমানার পানির নিচ থেকে উদ্ধার করেছি। আমরা পৌঁছাতে পৌঁছাতে যেসব মরদেহ ভেসে ওঠে আমরা তার হিসাব রাখি না। ওইসব মরদেহ আমাদের উদ্ধার করা সংখ্যার থেকেও বেশি। জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে শুধুমাত্র পানিতে ডুবে যেসব শিশুর মৃত্যু হয়, তার হিসাব রয়েছে।

আমরা এসব তথ্য গ্রাম পর্যায়ে আমাদের কর্মীদের থেকে নিয়ে থাকি। গেল দেড় বছরে জেলায় পানিতে ডুবে ৮৬ শিশুর মৃত্যুর তথ্য আছে আমাদের কাছে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, পানিতে ডুবে শিশুসহ সব বয়েসিদের মৃত্যু রোধে সামাজিক সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম চলমান রয়েছে আমাদের। এসব কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরো গুরুত্ব সহকারে কার্যকর করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত